শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

অবশেষে উখিয়া থানার ওসি গিয়াস উদ্দিন মিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা: গ্রেফতারের পরিবর্তে ১০ দিনের ছুটি


রামু নিউজ ডটকম
।।অবশেষে উখিয়া থানার ওসি গিয়াসউদ্দিন মিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। বুধবার জেলা ও দায়রা জজ মোক্তার আহমদ ওসি গিয়াসউদ্দিন মিয়ার গ্রেফতারী পরোয়ানাতে স্বাক্ষর করলেও পরদিন বৃহস্পতিবার পরোয়ানার কপি পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পাঠানো হয়।তবে এই পরোয়ানা জারির পর তাকে গ্রেফতারের পরিবর্তে ১০ দিনের ছুটি দেওয়া হয়। গতকাল পুলিশ সুপারের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে দুপুরেই তিনি তড়িগড়ি করে কর্মস্থল ছেড়েছেন।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রামু থানার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের চেইন্দা চর পাড়া এলাকার এক মহিলাকে গণধর্ষণ করে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত একটি নারী নির্যাতন মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভূক্ত একজন আসামিকে গ্রেফতার করেন রামু থানার তৎকালীন দারোগা এসআই প্রভাত কর্মকার। এসময় পরোয়ানা তামিলকারী দারোগা যথারীতি আসামিকে থানায় হস্তান্তর করলেও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন মিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সুবিধা নিয়ে ওই আসামিকে ছেড়ে দেন। এই ঘটনায় রামু থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গিয়াস উদ্দিন মিয়া ও তার সাথে অর্থ লেনদেনকারি মোহাম্মদ হোসেনের বিরুদ্ধে কক্সবাজারের বিশেষ জজ আদালতে বাদী পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আমিনুল হক গত ২০১১ সালের ২৬ জানুয়ারী দুর্নীতি দমন আইনে একটি ফৌজদারী দরখাস্ত দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠান। দূর্নীতি দমন কমিশন মামলাটি তদন্ত শেষে পুলিশ কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন মিয়াসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে মর্মে আদালতে রিপোর্ট পেশ করে। মামলার এজাহারে দু’জনকে আসামি করা হলেও দুদকের তদন্তে ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। অন্যজন হলেন দক্ষিণ মিঠাছড়ি এলাকার মোহাম্মদ উল্লাহ। গত ২২ জানুয়ারি মামলাটির শুনানির কথা ছিল। কিন্তু জেলা ও দায়রা জজ অসুস্থ থাকায় গত ১ ফেব্রুয়ারি মামলাটির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন আদালত আসামীর বিরুদ্ধে সমন জারির নির্দেশ দেন। সর্বশেষ বুধবার আদালত ওসি গিয়াসউদ্দিন মিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে। আদালত সূত্র জানায়, বুধবার জেলা ও দায়রা জজ মোক্তার আহমদ ওসি গিয়াসউদ্দিন মিয়ার গ্রেফতারী পরোয়ানাতে স্বাক্ষর করলেও পরদিন বৃহস্পতিবার পরোয়ানার কপি পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পাঠানো হয়। তবে এই পরোয়ানা জারির পর তাকে গ্রেফতারের পরিবর্তে ১০ দিনের ছুটি দেওয়া হয়। গতকাল পুলিশ সুপারের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ ইসরাফিলের কাছে দায়িত্বভার ও সরকারী মোবাইলটি হস্তান্তর করে দুপুরেই তিনি তড়িগড়ি করে কর্মস্থল ত্যাগ।কক্সবাজার টুডে ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ ইসরাফিল গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির কারণে দায়িত্বভার হস্তান্তরের কথা স্বীকার করে জানান, ছুটি শেষে ওসি গিয়াস আবারও উখিয়ায় ফিরে আসেন। উিিখয়া-রামু-টেকনাফের সহকারী পুলিশ সুপার ছত্রধর ত্রিপুরা বলেন, ওয়ারেন্ট জারির কথা শুনেছি। তবে এখনও পর্যন্ত (বৃহস্পতিবার রাত ১১ টা) ওসি গিয়াসউদ্দিনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। এদিকে গ্রেফতারী পরোয়ানাভূক্ত একজন আসামীকে গ্রেফতারের পরিবর্তে ১০ দিনের ছুটি দেওয়ায় এনিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে তোলপাড় চলছে। এবিষয়ে জানার জন্য পুলিশ সুপার সেলিম মোহাম্মদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, ওসি গিয়াস উদ্দিন মিয়া রামুতে থাকাকালে তার উৎকোচ বাণিজ্যের কারণে সাধারণ মানুষ অতিষ্ট হয়ে ওঠেছিল। উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটির একাধিক সভায় তার বিরুদ্ধে বার বার অভিযোগ ওঠে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর এলাকার লোক এবং প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন পরিচয় দিয়ে প্রকাশ্যে নানা অপকর্ম করে গেছেন। এ সময় তার উৎকোচ বাণিজ্যের বিরুদ্ধে সংবাদ ছাপায় কক্সবাজারের স্থানীয় একটি দৈনিকের এক সংবাদকর্মীকে থানায় ধরে নিয়ে গিয়ে তিনি মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালান এবং ওই সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনসহ একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় রামু ও কক্সবাজারের সংবাদকর্মীরা আন্দোলনে নামলে চাপের মুখে ওসি গিয়াস সবকটি মামলার চার্জশিট থেকে তার নাম বাদ দেন। ওসির বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাকে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া থানায় শাস্তিমূলকভাবে বদলী করা হয়। সেখান থেকে তদবির করে সম্প্রতি তিনি উখিয়া থানায় বদলী হয়ে আসেন। তার বিরুদ্ধে দুদক আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে তিনি আবার বেকায়দায় পড়ে যান। অভিযোগ ওঠেছে, ওসি গিয়াস বর্তমানে এ মামলা থেকে বাঁচার জন্য টাকার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন। জেলা এবং জেলার বাইরে সরকার দলীয় নেতাদের ম্যানেজ করে আদালতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এক সপ্তাহে ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের নকশা অনুমোদন দীর্ঘ ১১ মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু

মহসীন শেখ॥   দীর্ঘ এগার মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানীর ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ...