সোমবার, ১২ মার্চ, ২০১২

কক্সবাজারে‘আলীফ-লাম-মীম’ মসজিদটি বাস্তবায়ন হচ্ছেনা



মহসীন শেখ, কক্সবাজার ॥ 
                   কক্সবাজারের সর্বস্থরের মুসলমান সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে বেড়াতে আসা ধর্মপ্রাণ পর্যটকদের বহু প্রত্যাশিত অত্যাধুনিক স্থাপত্যের নিদর্শন ‘আলীফ-লাম-মীম’ মসজিদটি অনুদানের অভাবে বায়ন হচ্ছেনা। উদ্যোক্তাদের কার্যক্রমে স্থবিরতার কারণে মসজিদটি বাস্থবায়নের মূখ দেখছেনা বলেও সচেতন মহলের দাবী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ‘আলীফ-লাম-মীম’ মসজিদ নির্মাণ ও বাস্তবায়নে ২০০৮সালের ১৮অক্টোবর কক্সবাজার পর্যটন হোটেল শৈবালের তৎকালিন বীচ ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সহযোগীতায় ‘আলীফ-লাম-মীম’ মসজিদটি দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্দ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো। ওসময় মস্জিদটি নির্মাণ ও বাস্তবায়িত করতে কক্সবাজার পৌর সভার তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত মেয়র সরওয়ার কামালকে আহ্বায়ক ও সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে অবস্থিত সী-ইন মার্কেটের সত্বাধিকারী নুরুল আবছারকে যুগ্ন-আহ্বায়ক করে বীচ ম্যানেজম্যান্ট কমিটির কয়েকজন সদস্যদের নিয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। উক্ত কমিটির নামে ঢাকা ব্যংক কক্সবাজার শাখায় একাউন্ট করা হয়েছে যার (চলতি হিসাব নং-৮১১০০৭৫৬৮)। তার প্রেেিত একাউন্টে মসজিদটি নির্মাণের সহযোগার জন্য বেশ ধর্ম প্রাণ মুসলমান দানশীল ব্যক্তিরা বেশ কিছু অর্থও দান করেছিলেন। উক্ত আহ্বায়ক কমিটিতে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন, নুরুল আবছার সদস্য সচিব, আতাহার ইকবাল (সাবেক সভাপতি, কক্সবাজর প্রেস কাব) সদস্য আবুল কাশেম সিকদার সদস্য ও  
কক্সবাজার কমিউনিটি পুলিশ এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারী আলহাজ্ব জেবর মূল্লুক।
তবে অত্যাধুনিক স্থাপত্যের নিদর্শন ‘আলীফ-লাম-মীম’ মসজিদটি লাবণী পয়েন্টের সমুদ্রের সন্নিকটে ৬ কৌটি টাকা ব্যায়ে মসজিদটি নির্মিত হওয়ার কথা থাকলেও দায়িত্বরতদের অবহেলার কারণে কোন ধর্মপ্রাণ মুসলমান ব্যক্তি অথবা কোন দেশের অনুদান না পাওয়ায় তা হয়নি এবং মসজিদটি শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি। তবে ধর্মপ্রাণ সমাজের ধারণা বর্তমান সরকার একটু আন্তরিক হলে অত্যাধুনিক স্থাপত্যের নিদর্শন ‘আলীফ-লাম-মীম’ মসজিদটি দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব।
        আলিফ, লাম ও মীম এই তিনটি আরবী অর সুরা বাকারার (সুরা-২) শুরুতেই আছে। তারই দ্বারা বাহিকতায় সাগর পাড়ের এ মসজিদটির নামকরণ করা হয়েছে ‘আলীফ-লাম-মীম’ মসজিদ।পবিত্র কোরআন-এ রূপ অরকে ‘হুরূপ আল মুকাত্তা আত’ হিসাবে আছে। যার অর্থ মহান আলাহতালাই জানেন। তিনিই সবকিছুই জানেন।
 আমাদের কাছে যেমন বিশাল এ সাগরের অনেক কিছু অজানা রয়েছে তেমনি পবিত্র কোরআনের এ অংশগুলো আলাহর ইচ্ছায় আমাদের জ্ঞানের বাহিরে রাখা হয়েছে। এ যুক্তিতেই এ মসজিদের নামকরণ। এ মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে মুসলিলরা পবিত্র কোরআন ও ইসলাম সম্পর্কে বহু তথ্য ও ব্যাখার প্রতিফলন দেখতে পারবেন।
মসজিদটি নির্মাণের নিদাাংণ নকশা সূত্রে জানা যায়, ‘আলিপ-লাম-মীম’ মসজিদটি ৫৭ফুট ী১৯০ ফুট প্লাটফর্মের উপর তৈরীর হওয়ার কথা নকশায় রয়েছে। ৫৭ী১৯০=১০, ৮৩০ বর্গ ফুট আয়তন। এই অংকের লব্ধ ফলাফল ৫৭০ খ্রীষ্টাব্দে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর জন্মগ্রহনের কথা মনে করিয়ে দেবে। তাঁরই কাছে নাজিল হয় আমাদের জন্য মহান আলাহতালার শ্রেষ্ট গ্রন্থ পবিত্র আল-কোরআন।
                             ইসলাম ধর্ম মোট পাঁচ মূল স্তম্ভ এর উপর প্রতিষ্টিত যেমন ঈমান, সালাত (নামাজ), সউম (রোজা) যাকাত ও হজ। অনুরোপ ‘আলীফ-লাম-মীম’ মসজিদটি স্থাপিত হবে মোট মোট পাঁচ মূল স্তম্ভ (পিলার) এর উপর।
এ মসজিদটি আলীফ-লাম-মীম অরের আদলে তৈরী। দুটি মিনার ‘আলীফ ও লাম’-এর এবং মূল মসজিদ ‘মীম’-এর স্বত্তা প্রকাশ করছে। পাঁচটি খিলান ও দুটি মিনার মোট ৭টি স্থাপনা ৭টি বেহেস্তের প্রতীক হিসেবে চিন্তা করা হয়েছে।
মসজিদের মূল কাঠামো (মীম) ১১৪ ফুট লম্বা ১১৪=১৯ী৬ এবং দুই পার্শ্বের উচ্চতা ৫৭ ফুট (৫৭=১৯ ী৩)। মাঝের উচ্চতা রাখা হয়েছে ৩৮ ফুট। ৩৮=১৯ী২। মীম বা মূল কাঠামোর দুই পার্শ্বে মীম অরের আকৃতি দেয়ার জন্য গোল করে কাটা হয়েছে যার ব্যাস ১৯ ফুট।
ছোট মিনার ‘আলীফ’ ৭৬ ফুট লম্বা যার গায়ে মানব জাতির জন্য আলাহতালার কাছ থেকে আসা প্রথম বাণী ‘ইকরাহ্ বিইছমে......... খালাক’ লেখা থাকবে যা লিখতে ৭৬টি আরবী অরের প্রয়োজন (৭৬=১৯ী৪)। মিনারের উপর মাথা ‘আলীফ’ অরের আদলে কাটা থাকবে এবং ১৯ ফুটে বৃত্তাকার ফোকর থাকবে। বড় মিনারটি ৯৫ ফুট উঁচু (৯৫= ১৯৫) যার উপর মাথা ‘লাম’ অরের আদলে কাটা থাকবে এবং ১৯ ফুটে বৃত্তাকার ফোকর থাকবে।
           উভয় পার্শ্বে ২টি করে বারটি খিলানে মুসলমান গণিতবিদদের আবিস্কৃত গ্রাফিক্যাল গ্রীল থাকবে যাতে ১৯ সংখ্যার প্রতিফলনে ইসলামের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হবে।
পবিত্র কোরআন-এ ‘পানি’ শব্দটি ৩২ বার ব্যবহার করা হয়েছে এবং ‘ভূমি’ শব্দটি ১৩ বার, যার যোগফল ৪৫, ভূমি ও পানি’র অনুপাত করলে ফলাফল দাড়ায় ৭১.১১১১১১১১% পানি এবং বাকীটুকু ভূমি। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে যে, আধুনিক স্যাটেলাইটে মাপা পানি ও ভূমির অনুপাতও একই।
এ তথ্যটা সাধারণ একজন নামাজীর কাছে তুলে ধরার জন্য মসজিদের ১০,৮৩০ বর্গ ফুটে ৭১ ভাগ ফোর টাইল্স হবে স্বচ্ছ পানির মত যাতে মসজিদের প্রতিবিম্ব দেখা যাবে এবং বাকী টাইল্স ভিন্ন রং থাকবে যা ভূ-পৃষ্টের জমির পরিমাপের অনুপাতে।
মসজিদের উভয় পার্শ্বে উপরে উঠার জন্য মোট ১৫টি সিড়ি থাকবে ৭+৮=১৫। মসজিদে উঠতে ও নামতে ৭টি বেহেস্ত এবং ৮টি দোজখের কথা মনে করিয়ে দেবে।
মোট ১১৪টি বাতাস চলাচলের পথ (ভেনটিলেটর) থাকবে। ভেনটিলেটরের গ্রীলে আরবী ও বাংলায় ১১৪ সুরার নাম লিখা থাকবে। এর অবস্থান পবিত্র কোরআন-এর ক্রমানুসারে এবং মক্কা-মদিনায় নাজিল হওয়ার ভিত্তিতে স্থাপন করা হবে।
মসজিদের মূল ঝাড় বাতিটি পাঁচ স্তম্ভ বিশিষ্ট হবে। যার প্রথম বা উপরের সারিতে বাতির সংখ্যা ১৯০(=১৯ী১০), দ্বিতীয় সারিতে ১৫২টি(=১৯ী৮), তৃতীয় সারিতে ১১৪(=১৯ী৬), চতুর্থ সারিতে ৭৬=(১৯ী৪) এবং পঞ্চম বা শেষ সারিতে ৩৮(=১৯ী২)। মোট বাতি হবে ৫৭০টি, যা আমাদের প্রিয় নবীর জন্ম সাল।
মীমবার এর জায়গা ছাড়া ৩৮ কাতারে (১৯ী২=৩৮) ৫০ জন করে মোট ৯৫০জন মুসলি এক সঙ্গে মসজিদের ভেতরে নামাজ আদায় করতে পারবে (৯৫০=১৯৫০)। বাহিরে আরও ৪৭৫ জন (৪৭৫=১৯ী২৫)সহ এ মসজিদে মোট ১,৪২৫ জন মুসল্লী একসাথে নামাজ আদায় করত সম হবেন।
                           এছাড়াও পবিত্র কোরআন থেকে মাছ, সাগর, লোনা পানি, পানি চক্র ও জীবন সম্পর্কিত বিভিন্ন আয়াত পবিত্র কোরআন থেকে এ মসজিদে বাংলা তরজমাসহ লিপিবদ্ধ থাকবে যা সাধারন মানুষকে ধর্ম ও কর্ম সম্পর্কে বেশী করে জানার সুযোগ করে দেবে।
মসজিদের অভ্যন্তরে স্বল্পপরিসরে একটি পাঠাগার থাকবে। যেখান থেকে মানুষ ইসলাম, কোরআন ও সুন্নার আলোকে শিা লাভ করতে পারবে।
মসজিদের বাহিরে আটকোণা ঘরে একই সঙ্গে ১৯জন মুসলী’র ওজুর ব্যবস্থা থাকবে।  এর উপরে ২ ক বিশিষ্ট ঘরে ইমাম ও মোয়াজ্জিন-এর থাকার ব্যবস্থা থাকবে।মসজিদের বেস বা বন্যা জলোচ্ছাস থেকে রার জন্য চার পাশে ওয়েভ ব্রেকিং দেয়াল তৈরী করার হবে বলে নকশায় দেখা যায়। 
                       বিশ্বের পর্যটন রাজধানী খ্যাত কক্সবাজারে ওই মসজিদের অবস্থানের কারণে মসজিদের মিনার দুইটি পর্যটকদের জন্য বাড়তি আকর্ষন হতো। বিশেষ করে মিনার দুটির ফোকর দিয়ে আরবী কোন এক মাসের নির্দৃষ্ট তারিখে চাঁদকে এক সারিতে দেখা যাবে। এ দৃশ্য দেখার জন্য ঐ নিদৃষ্ট দিনে ও নে হাজার হাজার পর্যটক কক্সবাজারে আগমন হতো বলে আশা কার যায়। ওই সময়টি প্রতিবছরে নিদৃষ্ট সময় হারে পরিবর্তিত হবে এবং প্রতিবছর তার আগাম দিনণ প্রচার মাধ্যমে পর্যটকে
দর সুবিধার জন্য জানিয়ে দেয়া হবে। এই ঘটনাটি জ্যোতির্বিজ্ঞানে মুসলমানদের ঐতিহ্যের কথা নতুন করে স্বরণ করিয়ে দেবে। মসজিদে স্থাপিত তথ্য ও তার বর্ণনা থেকে একটাই সত্য প্রমাণিত হচ্ছে ‘আলাহ এক’। আমাদের  প্রিয় নবীজির কাছে কোরআন নাজিল করেছেন তিনি (আলাহ্) আখিরাত পর্যন্ত আমাদের জীবন বিধান হিসাবে যা কেবল আলাহ’র পে সৃষ্টি করা সম্ভব।
                       এদিকে জেলাবাসী দাবী বর্তমান সরকারের প থেকে একটু তৎপর হলে বহু প্রত্যাশিত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আধুনিক স্থাপত্যের নিদর্শণ ‘আলিফ-লাম-মীম’ মস্জিদটি নির্মাণ করা সম্ভব হবে ‘ইনশা-আললাহ্’।
উল্লেখ্য, মুসলমানদের মহাপবিত্র গ্রন্থ কোরআন শরীফের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করইে এই মসজিদের পরিকল্পনা করেছিলেন জীববিজ্ঞানী রাগীব উদ্দিন আহমদ।





এক সপ্তাহে ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের নকশা অনুমোদন দীর্ঘ ১১ মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু

মহসীন শেখ॥   দীর্ঘ এগার মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানীর ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ...