॥ সোয়েব সাঈদ ॥
কক্সবাজারের রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের দারিয়ারদীঘি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসী সহ অর্ধশত আহত হয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুল মাবুদ ও রামু থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্বরোচিত এ ঘটনায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি, শিক্ষক সমাজ ও এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল শনিবার (৩১ মার্চ) বিকালে এ ঘটনা ঘটে।
নতুন প্রধান শিক যোগদানে বাঁধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পরে মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে বিদ্যালয়ের শিক, ছাত্র-ছাত্রী ও গ্রামবাসী সহ অন্তত ত্রিশজন মারধরের শিকার হন।
দারিয়ারদীঘি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. জাফর জানান, পাশের পেঁচারদ্বীপ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বদলী হয়ে গতকাল সকাল নয়টার দিকে এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক পদে যোগদান করতে আসেন পাশের পূর্ব দারিয়ারদীঘি গ্রামের বাসিন্দা মো. জহির উল্লাহ। কিন্ত ওই শিকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ থাকায় এলাকাবাসী তাকে যোগদান করতে দেননি। এ অবস্থায় তিনি এলাকাবাসীর বাঁধার মুখে দুই-তিন ঘন্টা অবস্থানের পর চলে যান।
এ ঘটনার জের ধরে বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে জহির উল্লাহর ভাই মহিবুল্লাহ,আহসান উল্লাহ,নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে তাঁর নিজের এলাকা থেকে শতাধিক লোকজন এসে বিদ্যালয়ে হামলা চালায়।
এ সময় তারা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক মো.তাজু উদ্দিন, সহকারী শিক সুরজিত বড়ুয়া, বাবলি বড়ুয়া, শিক্ষার্থী শাহানা, রোকেয়া, সাইফুল, হামিদা, ফয়সালসহ অন্তত ত্রিশজন তাদের মারধরের শিকার হন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা এসময় বিদ্যালয়ে ফুলের টব,জানালার কাঁচ ভাংচুর, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির কার্ড তচনচ এবং বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মালামাল লুট করে।
এ ব্যাপারে শিক্ষক মো. জহির উল্লাহ জানান, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার লিখিত আদেশ নিয়ে তিনি ওই বিদ্যালয়ে যোগদান করতে যান। কিন্তু এলাকার কিছু কুচক্রিলোক বিদ্যালয়ের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের উসকে দিয়ে তাঁর যোগদানে বাঁধা সৃষ্টি করে। হামলার ব্যাপারে তিনি বলেন, এ ঘটনা আমি জানিনা। তবে শুনেছি পরে আমার ভাইয়েরা লোকজন নিয়ে সেখানে গেছে।
রামু উপজেলা শিক্ষা কর্মকতা মো. জাকের উল্লাহ জানান,সরকারী আদেশের প্রতি সকলের সম্মান দেখানো উচিৎ। আর ওই শিকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে কর্তৃপরে কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে পারে। হামলার বিষয়টিও খুব দুঃখজনক। ইউএনও স্যারসহ বসে এ বিষয়ে সিদ্বান্ত নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শহীদ মো. ছাইদুল হক জানান, সরকারী আদেশ কার্যকর করতে না দেওয়া মানে সরকারী কাজে বাঁধা দান। পরে লোকজন নিয়ে গিয়ে ওই শিক্ষকের পক্ষে যেটা করেছে সেটিও জঘন্য অপরাধ। এ বিষয়ে বসে সিদ্বান্ত নেওয়া হবে।