শনিবার, ৩১ মার্চ, ২০১২

উচ্চাকাঙ্খার লক্ষে শিক্ষাঙ্গনে রাখাইন শিক্ষার্থীরা

॥জাবেদ আবেদীন শাহীন॥ 
কক্সবাজার সিটি কলেজেরে শিক্ষার্থী খিন খিন নু, মাখিন, উছেন থেন জানান, ক্যারিয়ার গড়ার লক্ষে অনেক কষ্টে এই পর্যন্ত আসা। ভবিষ্যতের ব্যাংকার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ভাল ফলাফল অর্জনে এগিয়ে চলছি। তখনকার সময়ে লেখাপড়ার সুযোগ না থাকায় বাবামার সাধ আমরাই পুরণ করছি। তাদের অনুপ্রেরণায় লেখাপড়ার আগ্রহ বেড়েছে। এক্ষেত্রে লেখাপড়ার পেছনে
বেশীর ভাগ সময় ব্যয় করি। কারণ প্রাইভেটের পড়া,কলেজের পড়ার পাশাপাশি পরীক্ষার প্রস্তুতিত রয়েছে। ক্লাসে শিক্ষকদের ভাষা বুঝতে তেমন অসুবিধা হয় না। কলেজের বন্ধুরা খুব ভাল। এই কলেজে প্রায় শতাধিক রাখাইন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতি বছর শিক্ষাঙ্গনে বাড়ছে রাখাইনদের সংখ্যা।
সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী উমাচিং রাখাইন এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী । তিনি বলেন, ভাল রেজাল্ট করে ডাক্তারী পড়ার ইচ্ছে রয়েছে। এখন পড়ার চ্পা বেশী । পরীক্ষার প্রস্তুতি ভাল হয়েছে। পড়া লেখার পাশাপাশি মনিষীদের জীবন গ্রন্থ পড়তে তার ভাল লাগে। মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ,বাবা ব্যবসা করেন। তারা তিন ভাই তিন বোন। পেশকার পাড়ায় বসবাস। কলেজে অধ্যরত রয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক। তবে রাখাইন মেয়েদের সংখ্যা কলেজে বেশী। উমাচিংয়ের এক ভাই বুয়েটে পড়ছে।
বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে শিক্ষার ক্ষোত্রে আগ্রহ বাড়ছে। মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের ক্ষেত্রে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে অভিভাবকরাই বড় ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে রাখাইনদের মধ্যে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থী যাতায়তের সংখ্যা প্রতি নিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাখাইনরা নিজেদের সংস্কৃতি দিক দিয়ে ভাষাগত উত্তরনের লক্ষো নিজেদেরই পরিচালিত শিশু বিকাশ কেন্দ্রে প্রাথমিক অনুশীলনে পাচঁ বছর পর্যন্ত ব্যস্ত থাকে। পরবর্তীতে দেশীয় শিক্ষায় প্রথম ধাপ হিসাবে বিভিন্ন সরকারী বেসরকারকারী প্রাইমারী বিদ্যালয়ের দিকে ঝুকছে রাখাইন ছেলেমেয়েরা।
বার্মিজ স্কুলের ছাত্র মংছেন খেন জানান, ভাল মত বাংলা শিক্ষা এখনো রপ্ত হয়নি। বাংলা অল্প বলতে  পারেন। তবে বেশীর ভাগ সময় রাখাইন ভাষায় কথা বলেন। স্কুলের শিকরা খুব ভালো । ভালো মত পড়া বুঝিয়ে দেয় বলে জানান। বাড়ীতে তার বাবা মা রয়েছে। থাকে পেশকারপাড়ায়। ভবিষ্যতে বড় হয়ে  বিমান চালানোর কথা বললেন।
চাউলবাজার এলাকার রাখাইন অভিভাবক মংশোয়ে প্রু বলেন, তার ছেলেমেয়েরা স্কুলকলেজে পড়ালেখা করছে। মেয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়ছে। কক্সবাজার জেলায় রাখাইনদের মধ্যে লেখাপড়ার প্রতি নিয়ত আগ্রহ বাড়ছে। বর্তমান যুগের সাথে চলতে গেলে শিক্ষা ছাড়া জীবন অর্থহীন যে কোন জাতীর অগ্রগতির প্রথম ধাপটায় হচ্ছে শিক্ষা সেই সাথে অক্ষর জ্ঞান। আমি লেখাপড়ার মর্ম বুঝে আমার ছেলেমেয়েদেরকে মানুষ গড়ার লক্ষে বিদ্যা অর্জনের জন্য শিক্ষাঙ্গনে পাঠিয়েছি।
ডাঃ পুচনো বলেন, শিক্ষাই মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটায়। মানব সম্পদ উন্নয়নে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। বর্তমান রাখাইন সমাজ ব্যবস্থায় ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে পড়েছে। রাখাইন ছেলেমেয়েরা স্কুল মুখী হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেনী কে রাখাইন ছেলেমেয়েদের উপস্থিতি  চোখে পড়ার মত। দেশের বিভিন্ন মেডিকেলে কক্সবাজারের বেশ কয়েকজন রাখাইন সন্তান ডাক্তারী পড়ছে। শ্রীঘ্রই পাশ করে ডাক্তারী পেশায় ফিরে আসবে।
জানা যায়,কক্সবাজার জেলায় এক সময় অধ্যুষিত এলাকায় রাখাইনদের বসবাস ছিল। কালের বিবর্তনে নানান প্রোপটের কারনে রাখাইনরা স্থানারিত হয়ে অনেকে নিজেদের জায়গা জমি বিক্রি করে পাশ্ববর্তী দেশ মায়াইনমার ও দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে গিয়েছে। বিশেষ করে শহরের পেশকার পাড়া টেকপাড়া, ফুলবাগসড়ক, মাঝিরঘাট, মাছবাজার ,বাজারঘাটা, গোলদীঘিরপাড়, বৈদ্যেরঘোনাসহ বিভিন্ন এলাকায় রাখাইনদের বসবাস কমে গেছে। শহরের রাখাইনদের উপস্থিতি প্রায় দশহাজারের মত। ভাষাগত দিক দিয়ে রাখাইন শিশুদের জন্য আরডিএফএর উদ্যোগে শিশু বিকাশ কেন্দ্র রয়েছে। এখানে তিন থেকে পাচঁ বছরের শিশুদেরকে রাখাইন ভাষার পাশাপাশি বাংলা  বর্ণমালার শব্দের সাথে পরিচয় করে তোলা হয়। যাতে করে রাখাইন শিশুরা প্রাইমারী যে কোন স্কুলে ভর্তি হলে লেখাপড়া করতে যেন কোন সমস্যা না পড়ে। আর এতে করে রাখাইন ছেলেমেযেরা স্কুল মুখী হচ্ছে। সেই সাথে শ্রেনী কে অন্যান্য দের সাথে প্রতিযোগীতায় নেমে ভাল ফলাফল করছে। শহরের বিভিন্ন কিন্ডারগার্ডেন স্কুল, কেজি স্কুল, সরকারী বেসরকারী প্রাইমারী স্কুল কলেজ শিাঙ্গানে রাখাইন শিার্থীরা নিষ্ঠার সাথে লেখাপড়া করছে। বর্তমানে শহরে প্রায় পাঁচ শতাধিকেরও বেশী রাখাইন ছেলেমেয়ে স্কুল মুখী বলে বিশ্বস্থ সূত্র জানায়। কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা জানান, অন্য দশজনের মত কেউ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, অধ্যাপক, আইনজীবি, শিক,ব্যাংকার হওয়ার উচ্চাকাঙ্খা নিয়ে পড়ালেখা করছে।   
সিটি কলেজের অধ্য্য ক্যথিং অং বলেন, বিদ্যা শিক্ষা ছাত্র জীবনে অজ্ঞানতা, কুসংস্কার দুর করে শিার্থীর  জীবনকে মহীযান করে তোলে। মানুষের জন্য বিদ্যা অর্জন। প্রকৃত লেখাপড়া জীবনমূখী, জীবন বিবর্জিত নয়। যে দেশের মানুষ যত বেশী শিতি সে দেশ তত বেশী উন্নত। লেখাপড়া সকল জাতীর ক্ষেত্রে মৌলিক ও জন্মগত অধিকার। বর্তমানে রাখাইন অভিভাবককের আন্তরিকতার কারনে ছেলেমেয়েদের মাঝে লেখাপড়ার প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কক্সবাজার জেলায় আরডিএফের উদ্যোগে ২৫টি শিশু বিকাশ কেন্দ্র রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে রাখাইন শিশুদেরকে ভাষাগত উত্তরনের লক্ষে বিভিন্ন শিক্ষা বিশেষ করে বাংলা বর্ণমালা থেকে শুরু করে প্রাথমিক স্কুল পর্যায়ে আগে গড়ে তোলা হয়।   

























































































































এক সপ্তাহে ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের নকশা অনুমোদন দীর্ঘ ১১ মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু

মহসীন শেখ॥   দীর্ঘ এগার মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানীর ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ...