ঢাকা, ১৬ ফেব্রুয়ারি(আরটিএনএন ডটনেট): টেলিভিশন ও রেডিওতে অনুষ্ঠান প্রচারের সময় বাংলা ভাষার বিকৃত উচ্চারণ অথবা ভাষা দূষণ হয় এমনভাবে সংবাদসহ অনুষ্ঠান উপস্থাপন না করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ সংক্রান্ত রুলের শুনানি না হওয়া পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন এ আদেশ দেয়।
আদালত আদেশে জানায়, বাংলা ভাষার পবিত্রতা রক্ষা করতে সর্বোতভাবে চেষ্টা করতে হবে। এই ভাষার প্রতি আর কোনো আঘাত যাতে না আসে সে বিষয়ে সচেষ্ট হতে হবে।
একই সাথে বাংলা ভাষার পবিত্রতা রক্ষা ও দূষণ রোধে একটি রুলও জারি করেছে আদালত। সংস্কৃতি সচিব, তথ্য সচিব, বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) মহাপরিচালক, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসির চেয়ারম্যান, সব বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রধান কর্মকর্তা; রেডিও টুডে, রেডিও এবিসি ও রেডিও ফুর্তির প্রধান কর্মকর্তাকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে হবে।
বাংলা ভাষার দূষণ, বিকৃত উচ্চারণ, ভিন্ন ভাষার সুরে বাংলা উচ্চারণ, সঠিক শব্দ চয়ন না করা এবং বাংলা ভাষার অবক্ষয় রোধে বাংলা একাডেমীর সভাপতি অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে প্রধান করে একটি কমিটি করারও আদেশ দিয়েছে আদালত।
এসব বিষয়ে নেয়া পদক্ষেপ আগামি ২০ মার্চের মধ্যে আদালতে একটি প্রতিবেদন আকারে জমা দেবে ওই কমিটি।
এই কমিটিতে কারা থাকবেন তা নির্ধারণ করবেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। তবে আদালত কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, নজরুল বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, কবি নির্মলেন্দু গুণ, রফিক আজাদ ও সৈয়দ শামসুল হকের নাম প্রস্তাব করেছে।
প্রথম আলোতে প্রকাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের লেখা একটি নিবন্ধ বৃহস্পতিবার আদালতের নজরে আনার পর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। আর এ প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রকিব উদ্দিন আহমেদ।
পরে আদালতে ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান ও মুরাদ রেজা, ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর এ বিষয়ের ওপর বক্তব্য রাখেন।
এ মামলার শুনানিতে আগামীতে ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, ব্যারিস্টার রফিক উল হক, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার আকতার ইমাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সদরুল আমিন, লেখক সৈয়দ শামসুল হক ও সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলামের বক্তব্য শোনা হবে বলে জানিয়েছে আদালত।