ঢাকা, ১৬ ফেব্রুয়ারি

-- যুদ্ধাপরাধের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে আইনি বিধি-বিধান গ্রহণে জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে স্পিকার অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ খানের সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের বেসরকারি সদস্য দিবসে এই সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি পাস হয়।
সংসদে প্রস্তাবটি আনেন ঢাকা-২০ আসনের সংসদ সদস্য ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদ।
তবে প্রস্তাবটি নিয়ে আইনমন্ত্রীর পক্ষে বক্তব্য দিতে গিয়ে আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করছে, তাদের বিচার প্রচলিত আইনেই করা সম্ভব।
তিনি অভিযোগ করেন, বিরোধীদলীয় নেতাসহ বিরোধী দলের বেশ কিছু নেতারা প্রকাশ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে কথাবার্তা বলছেন।
এছাড়া একটি মহল বা গোষ্ঠী মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনালকে বন্ধ করে দেয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলছেন বলেও উল্লেখ করেন কামরুল।
তবে তিনি সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করার সুপারিশ করলে সংসদ সদস্যরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় চিফ হুইপের উদ্যোগও কোন কাজে আসেনি।
অধিবেশনে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ক্ষুব্ধ হয়ে সংসদ সদস্যদের শান্ত করার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা শান্ত হউন। সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করা হবে না।’
এ সময় অধিবেশনের সভাপতিত্ব করছিলেন ডেপুটি স্পিকার শেখ শওকত আলী। কিন্তু বিলটি প্রত্যাহার সংক্রান্ত বিষয়টি সামনে এলে সংসদ সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে পড়লে নিজের কার্যালয় থেকে ছুটে আসেন স্পিকার আবদুল হামিদ। পরে সংসদ সদস্যদের দাবির মুখে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি গৃহীত হয়।
উল্লেখ্য, বর্তমানে একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ও বর্তমান আমীরসহ ছয় নেতা এবং বিরোধী দল বিএনপির এক সংসদ সদস্যসহ দুই নেতার বিচার চলছে।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও চারদলীয় জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামী শুরু থেকেই এই ট্রাইব্যুনালের বিরোধিতা করে আসছে।
এ দুটি দল সমমনাদের নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
তবে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের অভিযোগ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতেই বিরোধী দল শরিকদের নিয়ে আন্দোলনের নামে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করেছে।