সোমবার, ১২ মার্চ, ২০১২

রামুতে সংখ্যালঘু পরিবারের গৃহবধূকে নির্মমভাবে পিটিয়েছে এসআই রুহুল আমিন

॥মিজানুল হক॥  
রামু থানার দারোগা (এসআই) রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু পরিবারের গৃহবধূকে নির্মমভাবে মারধর করে বন্দুকের বাটের আঘাতে বাম হাতের কনুই এর হাড় ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দিনদুপরে একজন দারোগা সংখ্যালঘু পরিবারের গৃহবধূকে মারধর করার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শতশত নারী-পুরুষ ওই বাড়িতে ভীড় জমায় এবং ওই দারোগার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন। গতকাল রবিবার (১১ মার্চ) বেলা ১২ টায় হাইটুপী গ্রামে বর্বরোচিত এ ঘটনাটি ঘটে।এ পাশবিক নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ বিপু বড়ুয়া (২৪) রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের হাইটুপী গ্রামের রোজেন বড়ুয়ার স্ত্রী। গুরুত্বর আহতাবস্থায় ওই গৃহবধূকে প্রথমে রামু হাসপাতালে ও পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত গৃহবধূ বিপু বড়ুয়া সাংবাদিকদের জানান, বেলা বার টার দিকে তিনি সন্তানসহ বাড়ির শয়ন কক্ষে ঘমাচ্ছিলেন। এসময় রামু থানার এসআই রুহুল আমিন ও তিনজন কনষ্টেবল বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে তার স্বামী কোথায় জানতে চান। স্বামীর অনুপস্থিতির কথা জানাতেই এসআই রুহুল আমিন বিপু বড়ুয়াকে চুল ধরে মারধর ও পাশবিক নির্যাতন শুরু করে। এসআই রুহুল আমিন বিপু বড়ুয়াকে স্বামী রোজেন বড়ুয়ার জাতীয় পরিচয় পত্র ও ছবি দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। স্ত্রী বিপু বড়ুয়া জাতীয় পরিচয় পত্র ও ছবি স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে দেয়ার কথা জানালে এসআই রুহুল আমিন আরো ক্ষিপ্ত হয়ে বন্দুকের বাট দিয়ে বিপু বড়ুয়াকে আঘাত করলে সে চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। তার চিৎকারে শ্বাশুড়ি কাজলী বড়ুয়া (৫০) ও জাঁ চুমকী বড়ুয়া (২০) এগিয়ে এলে তারাও মারধরের শিকার হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাড়ির লোকজন আহত বিপু বড়ুয়াকে নিয়ে তাড়াহুড়া করার সুযোগে এসআই রুহুল আমিন ওই বাড়ির আসবাবপত্র তছনচ করে রোজেন বড়ুয়ার জাতীয় পরিচয়পত্র ও ছবি নিয়ে এবং অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
বিপু বড়ুয়ার শ্বাশুড়ি কাজলী বড়ুয়া জানান, এ ঘটনার এক সপ্তাহ আগেও দারোগা রুহুল আমিন গভীর রাতে ওই বাড়িতে গিয়ে তার ছেলেকে ধরতে আসার নামে পুত্রবধূ বিপু বড়ুয়ার শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায়। তিনি আরো জানান, কয়েকদিন পূর্বে রামু জোয়ারিয়ানালা এলাকার রোকন উদ্দিন নামের এক যুবক থানায় একটি চুরির মামলা করেন। জীপ গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরির ওই মামলায় তার ছেলে রোজেন বড়ুয়াকে সন্দেহজনকভাবে আসামী করা  হয়। ওই মামলায় তার ছেলেকে ধরতে এসে এসআই রুহুল আমিন তাকে এবং পরিবারের উপর এ নির্মম নির্যাতন চালান। তিনি আরো জানান, স্থানীয় এক গাড়ি মালিকের সাথে তার ছেলে রোজেন বড়ুয়ার একটি অলিখিত চুক্তিপত্র (নন জুড়িশিয়াল ষ্ট্যাস্প) এসআই রুহুল আমিন নিয়ে গেছে।
মামলার বাদী রোকন উদ্দিন জানান, সম্প্রতি তার একটি জীপের যন্ত্রাংশ চুরি হয়েছে। এনিয়ে তিনি রামু থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এতে রোজেন বড়ুয়াকে সন্দেহজনকভাবে অভিযুক্ত করেছেন। তবে গতকাল পুলিশ কর্তৃক রোজেন বড়ুয়ার স্ত্রী সহ পরিবারের সদস্যদের মারধরের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।
গৃহবধুকে নির্যাতনের বিষয়ে রামু থানার এসআই রুহুল আমিনের সাথে গতকাল রবিবার দুপুরে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রোজেন বড়ুয়া একজন পেশাদার চোর। বাড়িতে গিয়ে তার জাতীয় পরিচয় পত্র ও ছবি চেয়েছিলাম। স্ত্রী বিপু বড়ুয়া স্থানীয় মেম্বারের অনুপস্থিতিতে দিবেনা বলে জানালে আমি জোর করে জাতীয় পরিচয় পত্র ও  ছবি নিয়ে আসি। মারধরে বিষয়টি অস্বীকার করে এসআই রুহুল আমিন এ ব্যাপারে অসত্য সংবাদ ছাপালে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে জিডি করার এবং এসপিকে নালিশ দেবেন বলে শাশিয়ে দেন।
রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল জানান, বিষয়টি দুঃখজনক। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজান উদ্দিন জানান, এসআই রুহুল আমিন কর্তৃক গৃহবধূসহ ওই পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনের ঘটনাটি সত্য।

এক সপ্তাহে ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের নকশা অনুমোদন দীর্ঘ ১১ মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু

মহসীন শেখ॥   দীর্ঘ এগার মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানীর ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ...