॥অর্পন বড়ুয়া, রামু ॥
রামু উপজেলার ঐতিহ্যবাহী হাজারীকুল বোধিরত্ন বৌদ্ধ বিহার ও সত্যপ্রিয় বিদর্শন সাধনা কেন্দ্রের জায়গা দখলের জন্য একই এলাকার চিহ্নিত ভুমিদস্যুরা জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, গত ২৪ মার্চ শনিবার দুপুর ১ টায় ও বিকাল ৫ টায় বিহার প্রাঙ্গনে
৬/৭জন ব্যক্তিসহ ৩০/২৫ জনের একটি গ্রুপ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা সংগঠিত করে ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভুতিতে চরম ব্যাঘাত এনেছে। সেই সাথে বৌদ্ধ বিহারের পবিত্রতাও ক্ষুন্ন করেছে। বর্তমানে হামলাকারীরা হাজারীকুল গ্রামের নিরীহ ধর্মপ্রাণ মানুষকে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে বলে গ্রামবাসীর অভিযোগ। বিহারের পবিত্রতা ও ধর্মীয় পরিবেশ রায় রামুসহ কক্সবাজার জেলার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিহার পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ। রামু উপজেলার ঐতিহ্যবাহী হাজারীকুল বোধিরত্ন বৌদ্ধ বিহার ও সত্যপ্রিয় বিদর্শন সাধনা কেন্দ্রের জায়গা দখলের জন্য একই এলাকার চিহ্নিত ভুমিদস্যুরা জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, গত ২৪ মার্চ শনিবার দুপুর ১ টায় ও বিকাল ৫ টায় বিহার প্রাঙ্গনে
উল্লেখ্য গত ২৪ মার্চ শনিবার দুপুর ১ টায় হাজারীকুল বোধিরত্ন বৌদ্ধ বিহার ও সত্যপ্রিয় বিদর্শন সাধনা কেন্দ্রের জায়গা দখলের জন্য একই এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু সিন্ডিকেট চক্র মৃত অন্তপ্রু বড়ুয়ার ছেলে মধু বড়ুয়া (৩৪), লুধু বড়ুয়া (৩৬) অধির বড়ুয়া (৩৮), সুধির বড়ুয়া (৪২) ও স্বামী পরিত্যাক্ত তাজলী বড়ুয়া (৩৭) ও লুধু বড়ুয়ার স্ত্রী প্রভা বড়ুয়া (৩১), অধির বড়ুয়ার স্ত্রী সাগরী বড়ুয়া (৩৩)সহ ৩০/২৫ জনের একটি গ্রুপ বিহারের জায়গা দখল করতে চাইলে গ্রামের ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষ তাদেরকে বাধা দেয়। ফলে ভুমিদস্যুরা ক্ষিপ্ত হয়ে গ্রামের সাধারণ জনতার উপর সশস্ত্র ভাবে আক্রমন করে। সন্ত্রাসী হামলায় আইনজীবি সহকারী অলসেন বড়ুয়া (বাবু)সহ রূপায়ন বড়ুয়া (টারজেন), রিগ্যান বড়ুয়া (কালু), মিঠন বড়ুয়াসহ অনেকেই আহত হন। খবর পেয়ে রামু থানার এসআই এস.এম মিজানুর রহমান ফোর্সসহ তাৎনিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সম হন। পরে বিকাল ৫ টার দিকে উল্লেখিত ভূমিদস্যুরা দলবদ্ধ হয়ে পুনরায় বিহার কমিটির সদস্যদের উপর আক্রমন চালায় বলে স্থানীয়রা জানায়।
বোধিরত্ন বৌদ্ধ বিহার ও সত্যপ্রিয় বিদর্শন সাধনা কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পরবিন্দু বড়ুয়া বলেন, উল্লেখিত ব্যক্তিরা খুবই অসৎ চরিত্রের মানুষ। তারা দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের অসহায় স্বামী পরিত্যাক্ত, এতিম ও বিধবা নারীর জায়গা কুটকৌশলে দখল করে ভোগ করে আসছে। শেষ পর্যন্ত গ্রামের ধর্মপ্রাণ মানুষের একমাত্র উপসনালয় হাজারীকুল বোধিরত্ন বৌদ্ধ বিহারটির জায়গাও তাদের কুনজর ও অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে রেহাই পেল না। তিনি আরও বলেন এসব ভুমিদস্যু সন্ত্রাসীরা বিহারের জায়গা দখলের জন্য গ্রামের অসহায় মানুষের উপর দু’দফায় সন্ত্রাসী হামলা করেছে। তিনি এসব সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার জন্য রামুসহ কক্সবাজারের সকল বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মেম্বার আবুল বশর জানান, উল্লেখিত ভুমিস্যুরা বিহারের জায়গা দখলের উদ্দেশ্যে গ্রামের সাধারণ মানুষের উপর অমানবিক ভাবে সন্ত্রাসী হামলা করেছে। এ ঘটনায় গ্রামের অনেকেই আহত হয়। তিনি এ ন্যাক্কার জনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং হামলাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন মহলের প্রতি অনুরোধ জানান।
এছাড়া এসব ভুমিদস্যুরা ইতিপূর্বে গ্রামের অসহায় মানুষের সাথে অহরত প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তৎমধ্যে রামু-মরিচ্যা পুরাতন আরকান সড়কের ডান পাশে হাজারীকুল গ্রাম সংলগ্ন অসহায় বিধবা মনি বালা বড়ুয়ার জায়গা দখল, নিরর বৃদ্ধা শান্তি বালা বড়ুয়াকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বয়স্ক ভাতা উত্তোলন করে দেওয়ার কথা বলে রামু সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসে নিয়ে শান্তি বালার মাতৃক সূত্রে প্রাপ্ত জমি রেজিষ্ট্রী, নিলু প্রভা বড়ুয়াকে জায়গা বিক্রির কথা বলে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া, মৃত প্রিয়দর্শী বড়ুয়াকে জায়গা বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ এলাকায় তাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য ভূমিদস্যুতা ও প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। সংগঠিত এ ন্যাক্কারজনক ঘটনায় বর্তমানে হাজারীকুল গ্রামে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ঘটনায় জেলার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মাঝে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এসব চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন হাজারীকুল বোধিরত্ন বৌদ্ধ বিহার ও সত্যপ্রিয় বিদর্শন সাধনা কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দসহ সকল সম্প্রদায়ের সচেতন মহল।