॥ প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু ॥
রামুতে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) কর্তৃক এক গৃহবধূকে শারীরিক নির্যাতনের সংবাদ দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয়, আঞ্চলিক ও স্থানীয় সংবাদপত্র এবং অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে ছবিসহ গুরুত্বের সাথে ছাপানো হয়েছে। এসব সংবাদ মাধ্যমে পুলিশ কর্তৃক সংখ্যালঘু পরিবারের গৃহবধূকে নির্যাতনের অবর্ণনীয় চিত্র ফুটে উঠেছে। সংবাদটি প্রকাশের পর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জনমনেও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বলা যায় ‘টক অব দ্যা ডিস্ট্রিকট’।
আর ঘটনার পাত্র-পাত্রী যখন খোদ জনগনের
জানমালের নিরাপত্তা দানকারী পুলিশ ও সাধারণ কোন এক গৃহবধূ হয় তখন বিষয়টি রীতিমত আলোচনার তুঙ্গে না গিয়ে উপায় কি ! আমি দীর্ঘদিন ধরে লেখালেখির সাথে জড়িত থাকলেও এই ধরণের স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নিয়ে মাতামাতি খুব একটা করি না। কিন্তু গত ১৫ মার্চ দৈনিক কক্সবাজার বাণীর অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি পড়ে নিজেও একটু লেখার প্রয়োজন বোধ করলাম। রামুতে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) কর্তৃক এক গৃহবধূকে শারীরিক নির্যাতনের সংবাদ দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয়, আঞ্চলিক ও স্থানীয় সংবাদপত্র এবং অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে ছবিসহ গুরুত্বের সাথে ছাপানো হয়েছে। এসব সংবাদ মাধ্যমে পুলিশ কর্তৃক সংখ্যালঘু পরিবারের গৃহবধূকে নির্যাতনের অবর্ণনীয় চিত্র ফুটে উঠেছে। সংবাদটি প্রকাশের পর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জনমনেও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বলা যায় ‘টক অব দ্যা ডিস্ট্রিকট’।
আর ঘটনার পাত্র-পাত্রী যখন খোদ জনগনের
গৃহবধূ নির্যাতন ঘটনার নায়ক রামু থানার এস আই রুহুল আমিনকে কক্সবাজার থানার পুলিশ লাইনে অস্থায়ীভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে শাস্তি স্বরূপ। ঘটনার তদন্তকারী দল বলেছেন এসআই কর্তৃক গৃহবধূ নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে এবং উক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে জেলার নারী সংগঠন গুলো এ ঘটনার ব্যাপারে তৎপর হয়ে উঠেছে। তবে একটি কথা স্পষ্টারে মুখফোটে বলা যায় যে, গৃহবধু বিপু বড়ৃয়াকে সত্যিই গুরুতর ভাবে জখম করা হয়েছে। কিন্তু এর জন্য দায়ী কে, পুলিশ না অন্য কেউ। তা এখনো উদ্ঘাটিত হচ্ছে না। কিন্তু ঘটনার শিকার বিপু বড়ুয়া ও তার পরিবার পুলিশকে দুষছেন।
ভুক্তভোগী পরিবার ও ভিকটিম বিপু বড়ুয়ার কথা মতে ঘটনা চক্র হল বিপু বড়ুযার স্বামী রোজেন বড়ুয়া চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে পুলিশের কাছে আসামী। আইন বিভাগের আওতায় থেকে পুলিশের কাজ হল অভিযুক্ত আসামীকে গ্রেপ্তার করা যা নিয়ন্ত্রিত হবে থানার মাধ্যমে। আর বিচার বিভাগের কাজ হল আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো আসামীর বিচার করা যা আদালতে সম্পন্ন হবে। অর্থাৎ আদালত বা বিচার বিভাগ দন্ডবিধি অনুসারে আসামীর জন্য যে সাজা সাব্যস্ত করবে পুলিশ তা বাস্তবায়ন করবে। সোজা কথায় পুলিশের হাতে বিচার করার মতা থাকে না ; পুলিশ বিচারকার্য্যে সহযোগিতা করেন মাত্র। এমনকি পুলিশের দৃষ্টিতে অভিযুক্ত কোন ব্যক্তি দোষী হলেও আদালত কর্তৃক যদি সে নির্দোষ প্রমাণিত হয় তাহলে সেত্রে পুলিশের কিছুই করার থাকে না। কারণ বিজ্ঞ আদালত যাকে বেকসুর খালাস মঞ্জুর করেন সে পুরোপুরি দায়মুক্ত থাকেন। কোন ব্যক্তি এক ব্যক্তিকে গুরুতর ভাবে জখম করেছেন। জখম প্রাপ্ত ব্যক্তি তার জন্য থানায় মামলা করেছেন। এখন দায়িত্ব মোতাবেক পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে বাধ্য। কিন্তু গ্রেপ্তার করার পর তাকে অনুরূপভাবে জখম করার অধিকার পুলিশের নেই। আর যদি বাদী কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে পুলিশ আসামীকে শারীরিক নির্যাতন করে তাহলে সেটা হবে বেআইনী এবং মানবাধিকার লঙ্গন। অনেক সময় কোন গুরুতর মামলার আসামীকে গ্রেপ্তার করে সত্য উদ্ঘাটনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হয়। কিন্তু সেেেত্রও পুলিশকে আগে আদালতে কারণ দর্শিয়ে তার জন্য রিমান্ডের আবেদন করতে হয়। আদালত যদি রিমান্ড মঞ্জুর করেন তাহলে আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায় অর্থাৎ রিমান্ডে নেওয়া যায়। কথাগুলো প্রসঙ্গক্রমে আসছে এই কারণে যে সম্প্রতি রামু উপজেলার হাইটুপী গ্রামে পুলিশের অভিযুক্ত আসামী রোজেন বড়–য়া। পুলিশ তাকে স্বভাবত খুঁজতে পারেন। আইনের লোক হিসেবে তাকে গ্রেপ্তারের উছিলায় থানার প্রটোকল মেনে তার ঘরে ও যেতে পারেন। কিন্তু শয়নকে থাকা তার স্ত্রী নির্যাতনের শিকার হবে কোন যুক্তিবলে ?
বিপু বড়–য়ার অভিযোগ পুলিশ তাকে চুলের মুটি ধরে টানা হেঁছড়া করে সজোরে ধাক্কা দিলে সে গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হয়। সে ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে স্বামীর পরিচয় পত্র দিতে ড্রয়ার খুলতে গেলে পুলিশ তাকে বন্দুকের বাট দিয়ে ডান হাতে পুনরায় গুরুতরভাবে আঘাত করেন। দুঃখজনক ব্যাপার হল ঘরে আসামীকে না পেয়ে তার স্ত্রী কিংবা পরিবারকে হয়রানি করা মোটেই উচিত হয় নি। বর্তমানে প্রায় প্রতিটি থানায় পুরুষ পুলিশের পাশাপাশি মহিলা পুলিশও থাকেন। কোন মহিলাকে যদি চার্জ করার প্রয়োজন হয় তাহলে তিনি মহিলা পুলিশ ব্যবহার করতে পারতেন। দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার সমাজের নিত্যদিনের দৃশ্যপট। কিন্তু দুর্বলের উপর আইনের দায়িত্বশীল লোকের বেআইনী হস্তপে একটি গণতান্ত্রিক দেশের জন্য আদৌ শুভ সংবাদ নয়। কোন রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতা যদি কোন অপরাধ ঘটাতেন পুলিশ তার পরিবারে গিয়ে এই ধরনের নিছক ঘটনার জন্ম দিতে পারতেন কিনা ?
ঘটনার পরদিন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম কুমার পাল, সহকারী পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) ছত্রধর ত্রিপুরা এবং রামু থানার ওসি এ কে নজিবুল ইসলাম সহ তদন্ত দল নির্যাতনের শিকার বিপু বড়–য়ার বাড়ি ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিষয়টি তদন্তের জন্য যান। তদন্ত শেষে তারা আশস্থ করেছেন যে অভিযুক্ত এস আই রুহুল আমিন ঘটনার জন্য দায়ী বলে প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এখন সাধারণ মানুষের নিরীহ দৃষ্টি তাঁদের দিকে। রোজন চুরির ঘটনায় জড়িত কিনা তা আদৌ প্রমাণিত হয় নি। আবার আমরা রোজনকে নির্দোষ বলেও দাবী করছি না। স্ব্যা প্রমাণ মোতাবেক সুষ্ঠু তদন্ত হলে তা বেরিয়ে আসবে। রোজন যদি সত্যিই চুরির ঘটনায় জড়িত থাকেন তাহলে তার শাস্তি ভোগ করবে রোজন নিজেই। আর রোজনকে খুঁজে বের করে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দায়িত্ব পুলিশের। তখন পুলিশি নির্যাতনের শিকার গৃহবধু বিপুর শাস্তি হত সে একজন চোরের বউ। সমাজে তার স্বামীর কোন সম্মান নেই। স্বামীর জন্য তারও কোন গর্ব নেই। রোজন কোন খুনের মামলার আসামী নয়। চুরির মামলার সন্দেহজনক আসামী মাত্র। তাকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ এতটা হার্ড পজিশনে গেলেন কেন ? ছাগলের জন্য গরু ছিন্নি দেওয়ার কোন বালাই নাই। অবশ্যই আসামী গ্রেপ্তারের েেত্র পুলিশি তৎপরতা অভিনন্দন যোগ্য। কিন্তু এইেেত্র কোন অনভিপ্রেত ঘটনার সৃষ্টি হলে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আসামী খুঁজতে গিয়ে অনেক সময় দেখা যায় পুলিশ বাড়ির সব জিনিসপত্র তছনছ করে ফেলেন। পরিবারের লোকজনদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। এই আচরণ গুলো কিন্তু অপরাধের সামিল।
গত ১৫ মার্চ জেলা থেকে প্রকাশিত দৈনিক কক্সবাজার বাণী পত্রিকায় প্রথম পৃষ্ঠায় বড় অরের শিরোনামে এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ‘কোন ঘটনাই ঘটেনি, রোজন চোরের নাটক’ শিরোনামের এই প্রতিবেদনে প্রতিবেদক বলতে গেলে এক তরফা প্রতিবেদন করেছেন। প্রতিবেদকের এটা মানতে হবে যে এই ধরনের ঘটনায় সাধারণ মানুষ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এক শ্রেণীর মানুষ পূর্ব শক্রুতা হাছিল করার চেষ্টা করবেন। আর এক শ্রেণীর মানুষ আইনী কিছু বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হবে ভেবে মূেখ তালা লাগাবেন। অনুসন্ধানী প্রতিবেদন যদি অনেকটা মন্তব্য প্রতিবেদনের দিকে ঝোকে পড়ে অনুমান নির্ভরশীল এবং একতরফা হয় তাহলে বিজ্ঞ পাঠকমহল পড়া মাত্র বুঝে নেবেন যে এটি একটি পাতানো প্রতিবেদন। হ্যাঁ, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন অনেক সময় সরাসরি কারও পে ও বিপে যেতে পারে। কিন্তু যে সংবাদ সম্পর্কে অন্যান্য সকল সংবাদপত্র সরাসরি একতরফা কোন সংবাদ পরিবেশন করতে পারেনি, তা নিয়ে একটি মাত্র সংবাদ পত্র আচমকা কিভাবে ময়না তদন্ত সহ প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারে ? এখন আমরা কি এটাই ভাবব যে দৈনিক কক্সবাজার বাণী-ই একমাত্র সত্য সন্ধানী পত্রিকা যা একেবারে শতভাগ নির্ভেজাল সংবাদ প্রকাশের মতা এবং যোগ্যাতা রাখে। তবে আমি এটাও বলছি না যে একটি ভিত্তিহীন সংবাদ অধিকাংশ পত্রিকা ছাপালে তা সত্য বলে ছাপিয়ে দেওয়া যায়। তবে অন্যান্য পত্রিকা গুলো বলছে তারা ভিত্তিহীন কোন সংবাদ ছাপায়নি। তাহলে নিশ্চয় এই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি অন্যান্য পত্রিকাগুলোর ভাবমুর্তি ুন্ন করেছে। আমি নিজেও কক্সবাজার বাণী পত্রিকার একজন ভক্ত পাঠক এবং কাঁচা লেখক। তাই আমি চাইবো না যে কারো স্বেচ্ছাচারিতার কারণে কক্সবাজার বাণী প্রশ্ন বিদ্ধ হোক। আমার জানা মতে জেলায় নিয়মিত ১৩ টি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। আমি সবকটি স্থানীয় পত্রিকার নিয়মিত পাঠক। আমি দেখেছি দৈনিক কক্সবাজার বাণী ব্যতীত বাকী সবকটা পত্রিকায় গৃহবধূ নির্যাতিত হওয়ার ঘটনাটি ছাপা হয়েছে। কিন্তু কক্সবাজার বাণীতে গত ১৫ মার্চ ঘটনার কয়েকদিন পরে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছাপানো হয়েছে। কক্সবাজার বাণী পত্রিকার রামু প্রতিনিধি রয়েছেন। এখন প্রশ্ন হল তিনি কি সংবাদটি প্রেরণ করেন নি ? নাকি তার সংবাদ ছাপানো হয়নি ? না তার সংবাদ ছাপানোর অযোগ্য ছিল। তিনি উল্ল্যেখ করেছেন অন্যান্য সব পত্রিকা সত্য মিথ্যা যাচায় না করে সরল মনে সাংবাদিকরা এই ভূয়া সংবাদটি ছাপিয়েছেন। তাহলে ঐসব পত্রিকাগুলোর উপর পাঠক কতটুকু আস্তা রাখতে পারবেন। আর যদি প্রিন্ট মিডিয়া ভুল করেই এক তরফা পুলিশের বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবশন করে থাকেন ; তাহলে আমরা বলব মানুষের জীবন এবং ক্যারিয়ার নিয়ে ছিনিমিনি খেলার কোন অধিকার পত্রিকা কর্তৃপরে নাই। তাদের এই একটি ভুলের কারণে একজন দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তাকে নিরীহ গৃহবধূ পেটানোর দায়ভার মাথায় নিয়ে কক্সবাজার পুলিশ লাইনে যেতে হয়েছে। পুরো জেলা পুলিশ প্রশাসনকে মাথা ব্যাথা করতে হচ্ছে। আমরা অনেক সময় পুলিশকে খুব সহজে দোষারোপ করতে পারি। কিন্তু ভাবি না যে তাঁদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। তাঁরা মানুষের পে জীবন বাজি রেখে আসামী গ্রেপ্তার করতে যান। সুখ দুঃখের জনগনের পাশে থাকেন। তাঁরা সৈনিক এবং দেশের গর্বিত সন্তান। প্রিন্ট মিডিয়ার এই ধরনের সরলতা সাধারণ মানুষ কামনা করেন না। গত ১৬ মার্চ তারিখে দৈনিক কক্সবাজার সহ একাধিক পত্রিকায় দেখলাম এই বিষয়ে সংবাদ ছাপানো হয়েছে। তাহলে তারা কি বার বার একই ভূল করছেন ? কিন্তু তাদের উচিত ছিল পূর্বেকার ভূলের জন্য অভিযুক্ত এস আই এবং সাধারণ পাঠকের কাছে মা চাওয়া। আর এই ঘটনার পেছনে সংখ্যালঘু কথাটি আদৌ গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ দেশের প্রচলিত সংবিধানে একজন নাগরিকের পে যে সকল সুযোগ সুবিধার কথা বলা হয়েছে সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে একজন নাগরিক হিসেবে তিনি (বিপু) গণতন্ত্রবলে বিচার চাইতে পারেন। এখন পুলিশের সামনে দুটি বিষয় খাঁড়া হয়ে দাঁিড়য়েছে। প্রথমটা হল রোজনকে যে ঘটনার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে তিনি আসলে সেই ঘটনার জন্য দায়ী কিনা তা প্রমাণ করা এবং অপরটি হল পুলিশ গৃহবধূ বিপুকে আঘাত করেছেন কিনা। কিন্তু দুটি বিষয়কে যদি একসাথে গুলানোর চেষ্টা করা হয় তাহলে সেটা যুক্তিসঙ্গত হবে না, কারণ দুটি ঘটনা একই বিষয়কে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হলেও ঘটনা দুটি স্বতন্ত্র এবং আলাদা আলাদা বিষয়। এই যেমন এক খন্ড লোহা থেকে বটি অথবা কাচি বানানো হলেও আসলে কিন্তু লোহার টুকরা এবং বটি একই বস্তু নয়। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করা হলে এটা হবে চরম ভূল। রোজন যদি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে চোর বলে প্রমাণিত হয় তাহলে এই েেত্র তাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে। অপরদিকে পুলিশ যদি বিপুকে আঘাত করেছেন বলে প্রমাণিত হয় তাহলে তার জন্য পুলিশকেও কৃত অপরাধের জন্য সাজা ভোগ করতে হবে। এই যেমন তাঁকে প্রাথমিকভাবে কক্সবাজার পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এখন আহত বিপু কিন্তু যথেষ্ট কারণ দেখাতে পারছেন। যেমন পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়েছেন তা সত্য, বিপুর শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে তাও সত্য। বিপু তার আঘাতের জন্য স্বামীকে দায়ী না করে পুলিশকে দায়ী করছেন এটাও সত্য। পুলিশ কিন্তু বিপুর বাড়িতে যাওয়ার কথা অস্বীকার করতে পারছেন না। বিপু পুলিশের পে বলছেন না। আর বিপু যদি পপাতিত্বভাবে স্বামীকে বাচাঁবার জন্য অযথা পুলিশকে দোষারূপ করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চান তাহলে সেটা হবে তার চরম ভুল। কেননা পরবর্তীতে তার স্বামী তাকে আগের চেয়ে বেশি মাত্রায় নির্যাতন করতে পারেন। তখন কিন্তু তিনি আর পাশে কাউকে পাবেন না। পুলিশ এবং জনতা উভয় তাকে বাঁকা দৃষ্টিতে দেখবেন। আর যদি রোজন চোর স্বভাবের হয় এবং বর্তমানে বিচার যদি তার পে যায় তাহলে তিনি ভবিষ্যতে আবারও চুরি করার সম্ভাবনা আছে। সেদিন তিনি নিজেই প্রমাণ করবেন যে আসলেই তিনি চোর। এ ঘটনার জন্য তিনি দায়ী ছিলেন। এখন উভয় পরে মধ্যে একটা রফা হতে পারে। অর্থাৎ বিপু সুযোগ নিতে পারেন যে তার স্বামীকে মামলা থেকে মুক্তি দিলে পুলিশের বিরুদ্ধে করা তার অভিযোগ তুলে নেবেন। আর পুলিশ যদি এই রফায় রাজি হন তাহলে ইহা প্রমাণিত হবে যে পুলিশ আসলে দোষী ছিলেন।
এ ঘটনার েেত্র আমাদের প্রত্যাশা হল একটি নিরপে তদন্ত। যাতে অন্যায়ভাবে কেউ একতরফাভাবে ভুল বিচার এবং সিদ্ধান্তের শিকার না হন। হোক না তিনি গৃহবধূ, হোক না তিনি পুলিশ, হোক না তিনি চোর।