মঙ্গলবার, ১০ এপ্রিল, ২০১২

ভিক্ষায় এক মুঠো অন্ন, তাতেই খুশি ক্ষুধার্ত শিশুরা

জাবেদ আবেদীন শাহীন,কক্সবাজার ॥ 
সকাল থেকেই কিছু খাওয়া হয় নাই। কামাল,সাহেদ,রোকেয়া,মমতাজ,সুমি বন্ধুরা মিলে কাগজ কুড়ানোর পাশাপাশি বাড়ীতে বাড়ীতে ভিক্ষা করতে বের হয়েছি। অনেক সময় ভিক্ষায় খাবারও মিলে যায়। তখন মিলেমিশে এক মুঠো করে অন্ন ভাগ করে খায়, তারপর সবাই কাগজের সন্ধানে নেমে পড়ি। কুঁড়ানো কাগজ বিক্রি করে বাসায় গিয়ে বাবার হাতে টাকা তুলে
দিতে হয় না হলে রাতের খাবার বন্ধ থাকে। নিজের জন্য কয়েক টাকা খরচ করলে নির্যাতন চলে শরীরে। লেখাপড়ার কথা কেন জিজ্ঞেস করছেন । আমাদের টাকা নাই বলে বই,কলম স্কুলের জামা কিনতে পারি না। কথাগুলো বলছিলেন ফিশারীপারা এলাকার কুলসুমা আকতার(১০)।
   দারিদ্র্যের কারণে ককসবাজার জেলায় অধিকাংশ শিশু আজ বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিার আলো থেকে বঞ্চিত। জীবনের বাঁচার সংগ্রামে দুমুঠো অন্নের জন্য অল্প বয়সে দারিদ্রের কষাঘাতে ুধার্ত  শিশুরা নানান কাজে জড়িয়ে পড়ে। ুধা ,অভাব, দারিদ্র্যতার পরিবেশে অসহায় নিম্ন আয়ের পরিবার গুলোর শিশুরা বিদ্যালয়ের পাঠ গ্রহন থেকে অনেক দুরে। অনেকের ইচ্ছে থাকলেও অভাব তাদের জন্য বড় বাধা হয়ে দাড়ায়। খাদ্যের অন্বেষণে অনেকটা পরিবারের চাপে তারা টাকার মোহে ঝুঁকে পড়ছে ঝুঁকিপূর্ণ পেশায়। নিরক্ষর অভিভাবকদের অসচেনতার কারনে দারিদ্র্যে পীড়িত হাজার হাজার শিশু কিশোররা আজ স্কুল মুখি না হয়ে সংসারের কাজে জড়িযে পড়ছে।
অসুস্থ মা, ছোট বোনকে নিয়ে দুদিন উপোষ রয়েছি। পেটে কোন খাদ্য পড়েনি। সংসারের অভাব তার উপর মায়ের সুস্থতার জন্য ওসুধ কেনার টাকা দরকার। বসে না থেকে রমিজা খালার সহযোগীতায় ইট ভাঙ্গার কাজ পেয়েছি। কি আর করা প্রখর রৌদ্র তাপে ইট ভাঙতে খুব কষ্ট হয় , প্রথম কাজ করছি তাই হাতে অনেক ব্যাথা বেদনা সহ্য করতে হয়। দিনভর কাজ শেষে মজুরি পায় ১৩০ টাকা। বেকার হয়ে বসে থাকার চেয়ে ইট ভাঙ্গা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হলেও দিন শেষে টাকা পাচ্ছি। মায়ের জন্য ওসুধ কিনতে পেরেছি , মাবোনরা এখন উপোষ  নেই। কোন মতে সংসার চালাচ্ছি। লেখাপড়া করলে আমার মাবোনকে কে দেখবে। তবে মাঝে মধ্যে লেখাপড়া করতে আমার খুব ইচ্ছে করে । কথাগুলো বলছিলেন সমিতি পারার শিশু শ্রমিক মোঃ মান্নান(১২)।
জানা যায়, যে বয়সে বই কলম হাতে নিয়ে পাঠশালায় যাওয়ার কথা সে বয়সে অনেক শিশুরা নিজেই শ্রমিকে পরিণত হচ্ছে । নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের অভিভাবকরা দারিদ্রতার কারনে সংসারের অভাব দুর করতে ছেলেমেয়েকে বিভিন্ন কাজে সন্ধানে পাঠায় বলে বিভিন্ন তথ্যে জানা যায়। মূলত  অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা , অশিতি, ও দারিদ্রতার বিরাজ করছে। পারিবারিক চাপেই কোমলমতি শিশুরা শিার বই খাতা কলমের পরিবর্তে পর্দাপন করছে নানান কাজ কর্মে। এক্ষেত্রে বৈষম্যতা ডিঙ্গিয়ে জাত ভেদে পরাজিত হচ্ছে দারিদ্র্যের কাছে।
       বর্তমানে জেলা শহরে বর্তমানে অসংখ্য শিশু কিশোর মারাতœক ঝুঁকিপূর্ণ মরন পেশায় কর্মরত রয়েছে। তারা লবনের মাঠে, ,শুটকি মহাল, ইট ভাটা, লেদ মেশিনের কাজে, কীট নাশক বিক্রির দোকানে, ওয়ার্কশপে ওয়েলডিং  কাজে, ব্রীকফিল্ডে,হোটেল রেস্তোরায়,স্বর্ণের কারখানায় ,সাগরে পোনা আহরন,কাগজ কুড়ানো ,ঝিনুক বিক্রি, বেকারী ,কামারের দোকান,গাড়ীর গ্যারেজে,নির্মান শ্রমিক,স্ক্র্যাব ব্যবসা,রিকসা ও টমটম চালানো,ব্যাটারীর দোকানসহ ঝুঁকিপুর্ণ পেশায় শিশু শ্রমিকরা জড়িয়ে পড়ছে।  প্রতি বছর ঝুঁকিপুর্ণ পেশায় কাজ করতে গিয়ে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অনেকে পঙ্গুত্বের অভিশাপ নিয়ে জীবন যাপন করছে । শিশু অধিকার আদায়ের ল্েয বিভিন্ন সংগঠন কাজ করলেও তা থাকে শুধু কাগজে কলমে ফাইলে বন্দি। জেলায় শিশু একাডেমী নামক  প্রতিষ্ঠান থাকলেও বৈষম্যের নীতির কারনে অধিকার বঞ্চিতদের সেখানে জায়গা হয় না। অথচ এসব কর্তা ব্যক্তিরা বিভিন্ন সেমিনারে বড় বড় কথার ফুলঝুরি শোনান। বর্তমানে শহরের প্রধান সমস্যা রোহিঙ্গা শিশু কিশোররা। তারা শিশু কিশোর বয়সে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অপকর্মের সাথে  জড়িয়ে পড়ছে।
                                     

এক সপ্তাহে ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের নকশা অনুমোদন দীর্ঘ ১১ মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু

মহসীন শেখ॥   দীর্ঘ এগার মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানীর ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ...