রবিবার, ৪ মার্চ, ২০১২

প্রধানমন্ত্রীর কন্ঠে গান

॥ রামু নিউজ ডেস্ক॥
দেশের নামকরা কবি-সাহিত্যিক, শিল্পী, বুদ্ধিজীবীরা মাঠজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন, ঘুরে ঘুরে তাদের সঙ্গে কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী- শনিবার এ দৃশ্য দেখা গেছে শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনে।

এদিন বিকালে শতাধিক কবি-সাহিত্যিক, শিল্পী, বুদ্ধিজীবী কয়েকঘণ্টার জন্য জড়ো হন প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে। তারা আসেন প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত ‘প্রীতি সম্মেলনে’ যোগ দিতে।

বিকাল ৪টা থেকেই আসতে শুরু করেন আমন্ত্রিতরা। তখন দুটো ছনের ঘরে মাটির চুলোয় তৈরি হচ্ছে পিঠা-পুলি। পাশেই একটি খড়ের পালা। আছে ফুচকা-চটপটির দোকানও।

খানিক দূরেই ছোট্ট একটি মঞ্চ থেকে হঠাৎ করেই আড়বাঁশির সুরে ভেসে আসে- ‘মাঝি বাইয়া যাও রে...’। ক্ষণিক সময়ের জন্য থেমে গেল আড্ডা। চা-এর কাপে চুমক থামিয়ে নড়েচড়ে বসলেন কেউ কেউ।

আড়বাঁশির সুর দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে গান শোনান ফকির আলমগীর, কাঙ্গালিনী সুফিয়া, কিরণ চন্দ্র রায়, বারী সিদ্দিকী প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নিজেও গান গেয়েছেন। সবার সঙ্গে বসে তিনি খেলেন ফুচকা-চটপটি। অতিথিদের সঙ্গে মাটির বাসনেই খেয়েছেন তিনি।

কেন এ আয়োজন? বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে সবার সঙ্গে দেড় ঘণ্টা আড্ডা দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর কথাতেই আছে এর জবাব।

আড্ডা শেষে শেখ হাসিনা বলেন, “বহুদিনের ইচ্ছে ছিলো বরেণ্য ব্যক্তিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করব।”

“গণভবন মানে জনগণের ভবন। এখানে যিনি আসবেন নিজের বাড়ি মনে করবেন।”

জনগণের আকাক্সক্ষা পূরণে উপস্থিত সবার কাছে দোয়া ও উপদেশ চান প্রধানমন্ত্রী।

সন্ধ্যার আগে শিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসী ও তার বোন ফেরদৌসী রহমান, আব্দুল জব্বার, মিতা হক, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর সঙ্গে একই টেবিলে বসে একটি দেশাত্ববোধক গানে গলা মেলান প্রধানমন্ত্রী।

‘মাঝেমধ্যে এমন আয়োজন থাকা ভালো’

অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান প্রধানমন্ত্রীর দাওয়াত পাওয়াকে ‘বিরাট সম্মান’ হিসাবে অভিহিত করেন। অনুষ্ঠানে এসেই তিনি বলেন, “এখানে সবাই বড় বড় মানুষ, পড়াশোনা জানা। আমার মতো মুর্খের সংখ্যা এখানে খুবই কম। সবকিছু মিলিয়ে খুব ভালো লগেছে।”

অনেকগুলো বিখ্যাত লোককে একসঙ্গে দেখে জাদুকর জুয়েল আইচ বলেন, “ন্যাচারালি ভালো লাগছে। এর বেশি কিছু বলার নেই।”

ছনের ঘরে ছিকেতে মাটির বাসনে সাজিয়ে রাখা হয়েছিল মুড়ির মওয়া, বড়া, চিতই, ভাপা পিঠাসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় খাবার। মাঠজুড়ে সাজানো ছিলো চেয়ার-টেবিল। আর ছোট মঞ্চের সামনে বসার জন্য ছিল শীতল পাটি।

প্রধানমন্ত্রীকে এতো কাছে পেয়ে তাকে দুটি বই উপহার দেন কবি মহাদেব সাহা।

অনুষ্ঠানে কেমন লাগল- জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হলে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের কাছে আসতে পারি।”

এই প্রীতি সম্মেলনের মাধ্যমে অতিথিদের চিন্তাচেতনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর চিন্তাভাবনার সমন্বয় ঘটবে বলে মনে করেন এই কবি।

“অনানুষ্ঠানিক পরিবেশে সময় কাটিয়ে খুবই ভালো লাগছে,” প্রীতি সম্মেলনের শেষে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে এক কথায় অনুভূতি ব্যক্ত করেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

আর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত মনে করেন, মাঝেমধ্যেই এ ধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকলে ভালো হয়।

“দীর্ঘদিন পর অনেকের সঙ্গে দেখা হয়ে খুবই ভালো লাগছে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমানও এ ধরনের অনুষ্ঠান ‘মাঝেমধ্যে’ আয়োজন করা দরকার বলে মত দেন।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী যদি বিভিন্ন গ্র“পের সঙ্গে বসেন তাহলে তাদের সঙ্গে চিন্তার আদান-প্রদান হবে। তবে তা অবশ্যই অনানুষ্ঠানিক হতে হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরী বলেন, এই প্রীতি সম্মেলন আসলে সমাজের পরিশীলিত অংশের ‘মহাসমাবেশ’।

প্রীতি সম্মেলনে মূর্তজা বশীর, কাইউম চৌধুরী, হাশেম খান, ড. করুণাময় গোস্বামী, সৈয়দ আনোয়ারা হক, ড. রফিকুল ইসলাম, ফেরদৌসী প্রিয়ভাসিনী, মোনায়েম সরকার, সৈয়দ হাসান ইমাম, নাসির উদ্দিন ইউসুফ, হাসান আরিফ, লাকী ইমাম, মুস্তাফা নূর-উল ইসলাম, গোলাম কুদ্দুস, কবি রবিউল হুসাইন, ড. বরেণ চক্রবর্তী, আনিসুল হক, চিত্রনায়ক ফারুক, তারানা হালিম, এনায়েতুর রহমান বাপ্পী, কবি কাজী রোজী, শাকিলা জাফর, কুমার বিশ্বজিত, কিরণ চন্দ্র রায়, বারী সিদ্দিকী, আবু জাফর সিদ্দিকী, পীযুষ বন্দোপাধ্যায়, ক্যাথরিন মাসুদ, কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, রফিকুল আলম, আবিদা সুলতানা, শুভ্রদেব এবং মন্ত্রিপরিষদের সদস্যসহ বিভিন্ন অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত শতাধিক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।

গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের মধ্যে ছিলেন- মাহবুবুল আলম, গোলাম সারোয়ার, ইকবাল সোবাহান চৌধুরী, আবেদ খান, বেবী মওদুদ, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, শাহ আলমগীর, মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, নুরুল কবীর, সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ফরিদুর রেজা সাগর, শাইখ সিরাজ, ইমদাদুল হক মিলন, শ্যামল দত্ত, হাবিবুর রহমান মিলন প্রমুখ।

শিক্ষাবিদ জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, ড. শামসুজ্জামান খান, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, ড এনামুল হক, আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হারুন-অর-রশীদও যোগ দেন প্রীতি সম্মেলনে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

এক সপ্তাহে ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের নকশা অনুমোদন দীর্ঘ ১১ মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু

মহসীন শেখ॥   দীর্ঘ এগার মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানীর ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ...