সোমবার, ২৬ মার্চ, ২০১২

‘একচল্লিশ বছর পরেও আমি স্বাধীনতাটাকে খুঁজছি’ কোথায় আমার স্বাধীনতা-

॥ তোফায়েল আহমদ ॥  
ওইতো দেখা যায়। পাহাড়ের উপরই আমার স্বাধীনতা। মাঝখানে লাল পাহাড়ের মাটি। চারিদিকে সবুজ গাছগাছালি। আহ কি সুন্দর। মনে হয় অনেকদুর। আসলে অতি সন্নিকটে। স্বাধীনতা ডাকছে হাতছানি দিয়ে। যাবই যাব স্বাধীনতার পাহাড়ে। কিন্তু বন্ধুর পথ। এক পা সামনেতো দু’পা পেছলে যায়। রাস্তা নির্মাণ করা হয় কিন্তু টেকসই নয়। ব্রীজ-কালভার্ট সবই হয় কিন্তু চুরি-চামারি থেমে নেই। গ্রাম-গঞ্জে উন্নয়ন কর্মকান্ডের কমতি নেই। তবুও পাই না স্বাধীনতার নাগাল।
আমার স্বাধীনতা কতদুর -
একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ বলুন আর মুক্তিযুদ্ধ বলুন-বাঙ্গালীর মুক্তির জন্য নেতৃত্ব দিয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। তাই বলে সেই আওয়ামী লীগের একার স্বাধীনতা নয়-এই স্বাধীনতা একাত্তরের সাত কোটি আর এখনকার পনের কোটি বাঙ্গালীর গর্বের স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতার জন্যই ত্রিশ লাখ বাঙ্গালীর তরতাজা রক্ত রয়েছে। রয়েছে চার লাখ মা-বোনের ইজ্জত। এই স্বাধীনতার জন্যই  বাঙ্গালীর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান টুঙ্গিপাড়ায় চির শায়িত বঙ্গবন্ধু মুজিবের বিসর্জন রয়েছে স্বপরিবারে ১৯ টি তাজা প্রাণ। তবুও আমি স্বাধীনতাকে খুঁজে পাই না।
স্বাধীনতা তুমি কোথায়-
স্বাধীনতাকে খুঁজছি কালুরঘাট বেতারে। একাত্তরে চট্টগ্রাম বন্দরে ‘সোয়াত’ জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাসের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজর জিয়াকে মাঝপথে ফিরিয়ে নিয়েছিলেন তাঁরই ঘনিষ্ট সেনা কর্মকর্তা অলি (কর্ণেল অলি)। তারপর ২৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর পে কালুরঘাট বেতারে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন মুক্তিযোদ্ধা মেজর জিয়াউর রহমান। তারপরেও সেই কালুরঘাটেই স্বাধীনতাকে খোঁজাখুঁজি করা হচ্ছে। স্বাধীনতা খোঁজা হয় রাজনৈতিক মাঠে। স্বাধীনতাকে খোঁজা হয় ভোটের ব্যালটেও। কৃষকের গোলা, ব্যবসায়ীর ক্যাশ বাক্স, শিার্থীদের বই, শিাঙ্গণ, ইতিহাস সহ বাংলার পথে-প্রান্তরে নিরন্তর খোঁজা হয় এই স্বাধীনতাকে। তবুও পাই না।
এইতো আরেক স্বাধীনতা-
উগ্র মৌলবাদী গোষ্টি একের পর এক বোমায় খুঁজে ফিরে আরেক স্বাধীনতা। ৭৫’র ১৫ আগষ্টের ছোবহে সাদেকের সময় জাতির জনককে স্বপরিবারে হত্যার পর খোঁজা হয় এক স্বাধীনতা। তাদের ভাষায় ‘নাজাত।’ সেই গোষ্টিই বার বার আগষ্টে খুঁজে বেড়ায়। সেই ১৫ আগষ্ট ট্র্যাজেডির পর ১৭ আগষ্ট এবং সর্বশেষ ২১ আগষ্টের বোমা এবং ভয়াল গ্রেনেড হামলার পরেও মৌলবাদী জঙ্গী গোষ্টি থেমে নেই। তারা স্বাধীনতা খুঁজে বোমা-গ্রেনেডে। তারাই বানচাল করতে চায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম। তারাও বলে স্বাধীনতার কথা। পার্থক্য কেবল-যে স্বাধীনতায় বাঙ্গালীর মুক্তির স্বাদ নেই। নেই বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের স্বাধীনতার স্বাদ। তাইতো পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র এত তৎপরতা। পাচ্ছি না স্বাধীনতাকে।
শিল্পী হায়দার হোসেনের স্বাধীনতা-
দেশ প্রেমিক শিল্পী হায়দার হোসেনের জনপ্রিয় একটি দেশাত্ববোধক গান-‘কি দেখার কথা কি দেখছি-কি ভাবার কথা কি ভাবছি- কি বলার কথা কি বলছি- কি শুনার কথা কি শুনছি-ত্রিশ বছর পরেও আমি স্বাধীনতাটাকে খুঁজছি...।’ শিল্পী হায়দার হোসেন এ গানটি নিশ্চয়ই আজ থেকে আরো এগার বছর আগে রচনা করে সুর দিয়েছিলেন। তিনি তাঁর গানের প্রতিটি শব্দই উচ্চারণ করেছেন একদম বাস্তব সম্মত। যা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের সাথে জড়িত। শিল্পী তার গানে বলেছেন-স্বাধীনতা মানে কি শুধু শুধু এদেশের দালান-কোঠার মালিক হওয়া ? স্বাধীনতা মানে কি দরিদ্র মানুষগুলোর খাবার কেড়ে নেয়া ? স্বাধীনতা মানে কি অসহায় মানুষ নির্যাতনের শিকার হওয়া ? অর্থাৎ শিল্পী অবাক হয়েই প্রশ্ন করেছেন- স্বাধীনতা নিয়ে যা ভাবার কথা ছিল না আজ তাই আমরা ভাবছি, যা শুনার কথা নয় তাই শুনছি, যা বলার নয় তাই বলছি..। অথচ স্বাধীনতা এরকম হবার কথা নয়। তবুও আমরা সবাই যেন স্বাধীনতাটাকে খুঁজছি আর খুঁজছি। শিল্পী হায়দার হোসেনের সাথে একাতœতা ঘোষণা করে বলতে চাই- একচল্লিশ বছর পরেও আমি স্বাধীনতাটাকে খুঁজছি...।



এক সপ্তাহে ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের নকশা অনুমোদন দীর্ঘ ১১ মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু

মহসীন শেখ॥   দীর্ঘ এগার মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানীর ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ...