বৃহস্পতিবার, ১৫ মার্চ, ২০১২

কক্সবাজারে আলোচিত মিনা হত্যাকান্ড ॥ খুনি রাশেদ ধরা-ছোঁয়ার বাইরে ॥ বাদির পরিবার নিরাপত্তাহীন ॥ মাকে খোঁজছে শিশু রায়হান

মহসীন শেখ, চট্টগ্রাম থেকে ফিরে
কক্সবাজার শহরের কলাতলীতে নির্মম হত্যাকন্ডের শিকার গৃহবধু রাজিয়া নুর মিনার (২৭) খুনি ঘাতক স্বামী এখনও প্রকাশ্যে ঘুরা-ফেরা করছে। খুনি রাশেদ ও তার ছোট ভাই খোরশেদ আলম মিঠুসহ তাদের সহযোগীদের হুমকীতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে বলে অভিযোগ করেছে নিহত মিনার পরিবার। আদরের কন্যাকে হারিয়ে বার বার
মুর্ছা যাচ্ছে মা-বাবা ও ভাই-বোনরা। রাতে মায়ের শুণ্যতায় আহাজারী করছে শিশু রায়হান।
মামলার বাদি ইদ্রিস অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার ১ মাস অতিবাহিত হলেও এখনও ধরা না পড়ায় হত্যাকারী ও তার সহযোগীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। যে কোন মূহুর্তে ওই হত্যাকান্ডের অন্যতম সাী নিহত গৃহবধুর ৫ বছরের শিশু পূত্র রায়হানকে অপহরণ, মামলা পরিচালনাকারী মিনার বড় ভাই মহিউদ্দিনসহ তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা ও গুম করতে পারে বলেও আশংকাও করছেন তিনি। পাশাপাশি ঘটনার ১মাস অতিবাহিত হলেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ ওই হত্যাকারী রাশেদ ও তার প্রধান সহযোগী ছোট ভাই মিঠুসহ অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেফতার না করায় চরম হতাশায় ভূগছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, শহরের কলাতলীস্থ হোটেল এ্যালবাট্রসের ৪র্থ তলার ৪০৯ নং কে তার কন্যাকে নির্মমভাবে খুন করার পর পরই খুনির প্রধান সহযোগী মোঃ হাসান প্রকাশ দুলালকে আটক করা হয় একই হোটেল থেকে। তবে এখনও পর্যন্ত হত্যা মামলার প্রধান আসামী চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের মাজার গেইটস্থ সালেহ আহমদ চেয়ারম্যানের বাড়ি এলাকার আমিন সওদাগরের পূত্র রাশেদকে মামলা থেকে বাচাঁতে মোটা অংকের মিশন নিয়ে নেমেছে বলেও অভিযোগ করেন মামলার বাদি। ইতোমধ্যে খুনি সিন্ডিকেট সদস্যরা মিস মামলা করে কক্সবাজার ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্ট থেকে জর্জ কোর্টে মামলা নিয়ে জামিনের আবেদন করেছে। তিনি আরও বলেন, খুনিকে গ্রেফতারের জন্য ইতোমধ্যে চট্টগ্রামস্থ র‌্যাব-৭, ডবল মুরিং থানাসহ বিভিন্ন প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপরে শরনাপন্নও হয়েছেন। এরপরও হয়তো যে কোন মূহুর্তে খুনিরা জামিনে মুক্ত হয়ে আরও কয়েকটি হত্যাকান্ডের সৃষ্টি করতে পারে বলেও আশংকা করছেন তিনি।
নিহত মিনার শোকাহত মা লায়লা বেগম অশ্র“সিক্ত কন্ঠে বলেন, প্রতি রাতে মাকে এনে দিতে কান্না করছে ৫ বছরের পূত্র রায়হান। একটু বৃষ্টি হলেই তার মা কবরে বৃষ্টির পানিতে ভিজে যাবে এ আশংকায় কাঁদতে কাঁদতে তাদের বাড়ির পাশেই চির নিদ্রায় শায়িত কবরস্থানে ছুটে যায়। তিনি আরও জানান, তাদের বাড়ির পাশে প্রতিদিন অপরিচিত লোকজন ঘুরা ফেরা করে। এতে তিনি খুনি পরে লোকজনই রায়হানসহ অন্যান্যদের অনিষ্ট করতে ঘুরা-ফেরা করছে বলেও দাবি করছেন। তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও খুনিকে পুলিশ ধরছেনা, তবে আর কতজন খুন হলে ঘাতককে গ্রেফতার হবে তা সকলের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন তিনি। এক সময় তিনি বিলাপ করে কান্না করতে করতে বলেন, রাশেদের পরিবারের অবস্থা তেমন ভাল না হলেও ভাল ছেলে হিসাবে মেয়ের সুখের আশায় তার হাতে তুলে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিয়ের কয়েক মাস যেতে না যেতেই মিনাকে শারিরীক নির্যানত শুরু করে রাশেদের মা শামসুন্নাহার, ভাই মিঠু, বোন ফারজানা ও সোলতানা। মেয়ের দিকে চিন্তা করে সকলের আড়ালে রাশেদের হাতে লাখ লাখ টাকাও তিনি দিয়েছেন বিভিন্ন সময়। এরপরও পরিকল্পিত ভাবে তার সোনায় সোহাগা কন্যা মিনাকে ঘাতক রাশেদের হাতে নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হতে হয়েছে।
নিহত মিনার বড় ভাই মহিউদ্দিন জানান, মিনাকে খুনের পর থেইে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে পোষ্টার ও লিফলেট লাগানো হয়েছে। পাশাপাশি খুনি রাশেদকে ধরিয়ে দেয়া হলে এক ল টাকা পুরষ্কারও ঘোষণা করেছি। তবে এতো কিছুর পরও খুনি গ্রেফতার হচ্ছেনা। বরং উল্টো খুনির ভাই মিঠু বিভিন্ন ভাবে আমার পরিবারকে হুমকী প্রদর্শন করে যাচ্ছে। ১ সপ্তাহ পূর্বেও খুনি রাশেদকে চট্টগ্রাম পাসপোর্ট অফিসে দেখেছে অনেকে। কিন্তু রহস্যজনক ভাবে ঘাতককে দেখছেনা প্রশাসন। তিনি মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়ার দাবিও জানিয়েছেন।
নির্মম খুনের শিকার মিনার একমাত্র শোকাহত শিশু রায়হান এই প্রতিবেদককে বলেন, প্রতি রাতে সে মাকে স্বপ্নে দেখেন। মা এসে তাকে কাছে ডাকছে। অনেক সময় মা তার গালে হাত দিয়ে বসে থাকতেও দেখেন। অনেক সময় চোঁখের সামনে মাকে খুনের দৃশ্যটি ভেঁসে উঠলে বার বার আতঁকেও উঠে সে। সে স্পষ্ট করে বলে তার সামনেই কিভাবে তার মানে নির্মম ভাবে খুন করা হয়েছে। সে আরও বলেন, তার মাকে খুন করার পর বিষয়টি হোটেলে তাদের সাথে থাকা পার্শ্ববর্তী করে অনেকজনকে বললেও তার খুনি বাবাকে কেউ আটক করেনি। সে তার মায়ের খুনের বিচার চায়।
উল্লেখ্য, ১৭ ফেব্র“য়ারী ভোরে কক্সবাজার শহরের কলাতলীস্থ হোটেল এ্যালবাট্টসের ৪র্থ তলার ৪০৯নং কে শিশু পূত্রের সামনেই মা রাজিয়া নুর মিনাকে নির্মম ভাবে খুন করে ঘাতক পিতা মোঃ রাশেদ।

এক সপ্তাহে ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের নকশা অনুমোদন দীর্ঘ ১১ মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু

মহসীন শেখ॥   দীর্ঘ এগার মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানীর ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ...