॥ বিশেষ প্রতিবেদক,কক্সবাজার ॥
সরকারী কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ চাকুরীতে থাকাকালীন কোন ঠিকাদারী কাজ অথবা ব্যবসায় জড়িত থাকার বিষয়টি সরকারী নীতিমালায় থাকলেও তা তোয়াক্কা করছেনা অধিদপ্তরের শীর্ষ এক
দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। বেশ কয়েক বছর ধরে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকারী নিয়মনীতি না মেনে ঠিকাদারী পেশায় জড়িয়ে থাকার পাশাপাশি টেন্ডার গায়েব, কোটেশন, ডিপিএম ও আরএফকিউসহ নানা ভাবে সরকারী কোটি কোটি টাকা আত্নসাৎ করে চলছে। সর্বশেষ একটি নোটিশ গায়েব করে আবারও বড় ধরণের দূর্নীতির রেকর্ড করেছে সে।সরকারী কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ চাকুরীতে থাকাকালীন কোন ঠিকাদারী কাজ অথবা ব্যবসায় জড়িত থাকার বিষয়টি সরকারী নীতিমালায় থাকলেও তা তোয়াক্কা করছেনা অধিদপ্তরের শীর্ষ এক
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করে বলেন, ওই অধিদপ্তরের শীর্ষ দূর্নীতিবাজ শাখা কর্মকর্তা(এসও) ঠিকাদারী কাজে জড়িত থাকার পাশাপাশি চলতি অর্থ বছরের একটি টেন্ডার নোটিশ গায়েব করে আবারও বড় মাপের দূর্নীতি সংগঠিত করলেন। সূত্র জানান, চলতি অর্থ বছরে এ পর্যন্ত ১১টি টেন্ডার নোটিশ আহ্বান করা হয়েছে। তবে ১ থেকে ১১নং নোটিশ আহ্বান করা হলেও ওই সিরিয়ালের ৯নং নোটিশটি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং তার পছন্দসই কিছু ঠিকাদারকে হাতে নিয়ে গায়েব করেছে সে। সে এতই সু-কৌশলে নোটিশটি গায়েব করেছে নোটিশটির কাজের ধরণও কারও বুঁঝতে দেওয়া হয়নি।
দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রে আরও প্রকাশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় টেন্ডারকৃত জেলার বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ গুলো ঠিকাদারগণ সূষ্ট ও সঠিক ভাবে সম্পন্ন করছে কিনা তার তদরকির দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই ঠিকাদারী কাজে জড়িয়ে পড়ায় সরকারী উন্নয়ন কাজের নিয়ম শৃংঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, তাদের অধিদপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা বেশ ক’জন কর্মকর্তা-কর্মচারী বিভিন্ন ঠিকাদারদের সাথে নামে-বেনামে লাইসেন্স ব্যবহার করে নানা কৌশলে নিম্নদরে লাভজনক কাজ গুলো হাতিয়ে নিয়ে নিজেরাই করছে এবং ওসব কাজ নিজ দায়িত্বে থাকায় ৩ ভাগের ১ ভাগ কাজ শেষ না করেই সম্পূর্ণ বিল তুলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সাথে ভাগ বাটোয়ারা করে সরকারী টাকা আত্নসাৎ করে চলছেই। এতে উন্নয়ন কাজ গুলো অসমাপ্ত থাকায় অর্থনৈতিক ভাবে ব্যাপক তির সাধন হচ্ছে সরকার ও জেলা উন্নয়ন। একই ভাবে জেলার উপকুলীয় এলাকায়ও বেডিবাঁধের কাজ পূর্ণাঙ্গভাবে সমাপ্ত না কয়ায় বর্ষায় পানির ঢলে বেডিবাঁধ গুলো ভেঙ্গে গিয়ে জেলার নিন্মাঞ্চল গুলো বন্যায় প্রস্তাবিত হয় বলেও জানায়। তাছাড়া চলতি অর্থ বছরের ৯নং নোটিশ গায়েব করে আত্নসাৎ করেছে এসও আক্তারসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
বেশ ক’জন ঠিকাদার ও ওই অফিসের বেশ একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এসও আক্তার ঘুষের বিনিময়ে উপরি মহলকে বশ করে রাতকে দিন আর দিনকে রাতে রূপান্তর করে চলছে। প্রতি বছর কোটেশন, আরএফকিউ ও এফডিএমসহ নানা খাতে ব্যায় দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে যেমন সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি কক্সবাজারের উন্নয়ন কাজে ব্যাপক ভাবে পিছিয়ে পড়ছে। ওই দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা সদরের দায়িত্বে থাকায় গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুলোতে তিনি নিজেই জড়িত থেকে ওসব কাজ অসমাপ্ত থাকা সত্বেও ওসব ঠিকাদারদের নামে সম্পূর্ণ বিল হাতিয়ে নেন। প্রায় ৩ বছর পূর্বে শহরতলীর খরুলিয়া, পিএম খালী, খুরুস্কুল এবং শহরের সমিতি পাড়া, কুতুবদিয়া পাড়া ও চর পাড়ার হাজার হাজার মানুষের একমাত্র দূঃখ হিসেবে পরিচিত খালের বেডিবাঁধের কাজের আহ্বানকৃত টেন্ডারটি অসমাপ্ত রেখে পুরো বিলটি গিলে খেয়েছেন ওই কর্মকর্তাসহ কয়েকজন যোগ সাজস করে। এমনকি বেডিবাঁধের কাজটি অতি নিম্ন দরে তারা নিজেরাই নেন। তবে ওই কাজের ৩ ভাগের ২ ভাগ কাজ শেষ না হতেই পুরো বিলটি দিয়ে দেয়। ফলে আজ অব্দি বেডিবাঁধটি অসম্পন্ন থাকায় বর্ষা শুরু হলেই ওই এলাকা গুলো ঢলের পানিতে প্রস্তাবিত হয়। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এসও আক্তারের মোঠো ফোনে একাধিক কল করা হলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।