শুক্রবার, ৯ মার্চ, ২০১২

রাষ্ট্রপতির ৮৪তম জন্মদিন শুক্রবার

॥ রামু নিউজ ডেস্ক॥     রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের ৮৪তম জন্মদিন শুক্রবার। ১৯২৯ সালের ৯ মার্চ কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি শপথ নেন। 

নারী নেত্রী এবং মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভি রহমান ছিলেন জিল্লুর রহমানের সহধর্মিনী। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে জনসভায় অংশ নেওয়ার সময় সন্ত্রাসীদের নৃশংস গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমান গুরুতর আহত হয়ে দুই দিন পর মারা যান। জিল্লুর রহমান এক ছেলে ও দুই মেয়ের জনক।

জিল্লুর রহমানের বাবা প্রয়াত মেহের আলী মিয়া ছিলেন একজন আইনজীবী। তিনি তৎকালীন ময়মনসিংহ লোকাল বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং জেলা বোর্ডের সদস্য ছিলেন।

ময়মনসিংহ জেলা শহরে রাষ্ট্রপতির শিক্ষা জীবন শুরু হয়। ১৯৪৫ সালে ভৈরব কে বি হাইস্কুল থেকে তিনি
ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে তিনি আইএ পাস করেন। ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে অনার্সসহ এমএ ও এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন। 
জিল্লুর রহমান ১৯৫২ সালে মহান ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৫২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক আমতলায় এক ছাত্র সমাবেশে তিনি সভাপতিত্ব করেন।

১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ফজলুল হক মুসলিম হল ও ঢাকা হলের মাঝখানে পুকুরপাড়ে যে ১১ জন বিশিষ্ট ছাত্রনেতা বৈঠক করেছিলেন তিনি ছিলেন তাদের একজন এবং সেখানে তারা ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

১৯৫৩ সালে তিনি ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্র সংসদ বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন। ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেওয়ার জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হন এবং তাঁর মাস্টারস ডিগ্রি প্রত্যাহার করা হয়। তবে ছাত্রদের তীব্র আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁর ডিগ্রি ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়।

তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন এবং ১৯৫৬ সালে কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। ষাটের দশকে তিনি ঢাকা জেলা বার সমিতির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

জিল্লুর রহমান ১৯৪৭ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে আসেন। তখন তিনি ছিলেন ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজের ছাত্র এবং ব্রিটিশ শাসনামলে সিলেটে গণভোটের প্রচারণা চালাচ্ছিলেন।

১৯৬২ সালে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানসহ বঙ্গবন্ধুর একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে তিনি সব গণআন্দোলনে অংশ নেন। ১৯৭০ সালে তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমএনএ) নির্বাচিত হন।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বিশিষ্ট সংগঠক ছিলেন জিল্লুর রহমান। তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র এবং তৎকালীন মুজিবনগর সরকারের মুখপাত্র জয়বাংলা পত্রিকা প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। 

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভের পর পরই জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে জিল্লুর রহমান বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। তিনি ১৯৭৩ ও ১৯৮৬ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর জিল্লুর রহমান চার বছর কারাবন্দী ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সাত বছর নির্বাসিত থাকার পর ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে এলে ওই সময় জিল্লুর রহমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

১৯৯৬ সালে তিনি সপ্তম জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য নির্বাচিত ও মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।

মন্ত্রিত্ব থেকে শুরু করে সংসদের উপনেতা হিসেবে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি সফলতার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর একই বছরের ১৬ জুলাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা গ্রেফতার হলে জিল্লুর রহমান সেই দুঃসময়ে অত্যন্ত দক্ষতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে দলের নেতৃত্ব দেন।

বিশেষ কারাগারে শেখ হাসিনার ১১ মাসের বন্দিত্ব এবং চিকিৎসার জন্য ছয় মাস বিদেশে অবস্থানকালে জিল্লুর রহমান দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে গুরত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

২০০৮ সালে ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে। তিনি ষষ্ঠবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। 

২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি শপথ নেয়ার আগ পর্যন্ত তিনি সংসদ উপনেতা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

এক সপ্তাহে ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের নকশা অনুমোদন দীর্ঘ ১১ মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু

মহসীন শেখ॥   দীর্ঘ এগার মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানীর ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ...