শুক্রবার, ৯ মার্চ, ২০১২

সত্যপ্রিয় মহাথেরর হিরক জয়ন্তী উৎসব ও বৌদ্ধ মহা সম্মেলনে ড. গওহর রিজভী.... রামুর অসাম্প্রদায়িক চেতনা সত্যিই মুগ্ধ করেছে

॥সুনীল বড়ুয়া॥    দেশ বিদেশের প্রায় একহাজার বৌদ্ধ ভিক্ষু ও শ্রামন এবং হাজার হাজার পূণ্যার্থীর শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে কক্সবাজারের রামু উপজেলায় গতকাল শুক্রবার সম্পন্ন হয়েছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বৌদ্ধদের সবোর্চ্চ ধর্মীয়গুরু বৌদ্ধ সাধক পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথেরর দুইদিন ব্যাপী হিরক জয়ন্তী উৎসব ও বৌদ্ধ মহাসম্মেলন। শিশু-কিশোর, আবাল বৃদ্ধবনিতার অংশগ্রহনে এ উৎসব মহা মিলন মেলায় পরিণত হয়।
 এ উৎসবকে ঘিরে রামুকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। প্রায় ত্রিশটি বৌদ্ধপল্লীতে বিরাজ করছে উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
রামু খিজারী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্টিত গতকাল শেষ দিনে উৎসবে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের বৌদ্ধদের সবোর্চ্চ ধর্মীয়গুরু ড. ধর্মসেন মহাথের। অনুষ্টানে প্রধান অতিথি ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। স্বাগত বক্তব্য দেন, উদযাপন পরিষদের নির্বাহী সভাপতি তরুন বড়–য়া।
 অনুষ্টানে প্রধান অতিথি হিরক জয়ন্তী স্মারক ‘আর্য্যসত্য’র মোড়ক উন্মোচন করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বৌদ্ধপূরাকীর্তির জন্য ঐতিহাসিক  জনপদ রামু উপজেলা। এখানকার মুসলিম,হিন্দু,বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে যে অসামম্প্রদায়িক চেতনা সত্যিই আমাকে মুগ্ধ করেছে। অচিরেই রামু সীমা বিহার এবং রামুর প্রাচীন বৌদ্ধ বিহারগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি বলেন কক্সবাজারবাসী একজন পূণ্য পুরুষকে সম্মানিত করে নিজেরাই ধণ্য হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে জয়ন্তী নায়ক সত্যপ্রিয় মহাথেরকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি রামুবাসীর ভালবাসা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। 
বিশেষ অতিথি ছিলেন, সোনালী ব্যাংকের পরিচালক সাইমুম সরওয়ার কমল,রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল, সিভিল সার্জন ডাঃ কাজল কান্তি বড়ুয়া ,কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম, ফ্রান্সের কে আনন্দ মহাথের, ভিক্ষু ইউ কুমারা, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির চেয়ারম্যান অজিত রঞ্জন বড়ুয়া, বাংলাদেশ বুদ্ধিষ্ট ফেডারেশনের সভাপতি বিশ্বপতি বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক অশোক বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সিনিয়র সহসভাপতি পি আর বড়ুয়া, মহসচিব ড.প্রণব কুমার বড়ুয়া,ভারতের কোলকাতার বৌদ্ধ ধর্মাংকুর সভার সাধারণ সম্পাদক হেমেন্দু বিকাশ চৌধুরী,রিসো কোসেই কাই বাংলাদেশের ব্রাঞ্চ মিনিষ্টার মিসিউকি আরিতোমি প্রমুখ। অন্যান্যদের মধ্যে হিরক জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রিয়রতœ মহাথের ও মহাসচিব ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয় বক্তব্য দেন। অনুষ্টান সঞ্চালনায় ছিলেন ব্যারিষ্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া ও অধ্যাপক নীলোৎপল বড়ুয়া।
 এর আগে গত শুক্রবার দুপুরে রামু সীমা বিহার প্রাঙ্গনে পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথেরর জীবন ভিত্তিক আলোক চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শহীদ মোঃ ছাইদুল হক। তিনটায় বের করা হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা । শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল। এ সময় অপূর্ব কারুকাজে সাজানো স্বর্গের কল্পরথে সত্যপ্রিয় মহাথেরকে তুলে নানা বাদ্যে তালে তালে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করা হয়। 
শুক্রবার বিকালে অধ্যক্ষ জিতেন্দ্র লাল বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ‘থেরবাদ বৌদ্ধধর্ম প্রতিষ্টায় দক্ষিণ চট্টলার ভিক্ষুসংঘের অবদান’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্টিত হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান ডাঃ প্রভাত চন্দ্র বড়–য়া। স্বাগত বক্তব্য দেন অ্যাডভোকেট সুনীল বড়–য়া। আলোচনায় অংশ নেন চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যভাষা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. জিনবোধি ভিক্ষু, ভারতের বুদ্ধগয়া আন্তজার্তিক সাধনা কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ড.বরসম্বোধি থের,  চট্টগ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. দীপংকর শ্রীজ্ঞান বড়ুয়া, অধ্যাপক জয়সেন বড়ুয়া, চট্টগ্রাম কলেজের পালি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক অর্থদর্শী বড়ুয়া, জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধ্যাপক জগন্নাথ বড়ুয়া, ও অ্যাডভোকেট রাখাল চন্দ্র বড়ুয়া।  শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, অধ্যাপক অরবিন্দু বড়ুয়া, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের ট্রাষ্টি সুপ্ত ভূষন বড়ুয়া, বাবুল শর্মা, বোধিমিত্র বড়ুয়া, বংকিম বড়ুয়া,সুবীর বড়ুয়া বুলু, অরূপ বড়ুয়া কালু,অলক বড়ুয়া ও দুলাল বড়ুয়া। সেমিনার সঞ্চালনায় ছিলেন সাংবাদিক সুনীল বড়ুয়া।
হিরক জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি প্রিয়রতœ মহাথের ও  মহাসচিব ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয় বলেন, সারা বাংলাদেশের বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত পূজনীয় ধর্মীয়গুরু পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের। এ উৎসবকে ঘিরে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে রামুর প্রায় ত্রিশটি বৌদ্ধপল্লীতে উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। অনুষ্টানে মিয়ানমার, ভারত, অষ্ট্রেলিয়া,নেপাল, শ্রীলংকা,থাইল্যান্ড,ফ্রান্সসহ দেশবিদেশের প্রায় একহাজার বৌদ্ধ ভিক্ষু ও শ্রামন অনুষ্টানে অংশ নেন। শেষদিনে সারা দেশের লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছে।

এক সপ্তাহে ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের নকশা অনুমোদন দীর্ঘ ১১ মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু

মহসীন শেখ॥   দীর্ঘ এগার মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানীর ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ...