॥ রামু নিউজ ডেস্ক॥ বিএনপির চেয়ারপাসন ও বিরোধী দলের নেত্রী খালেদা জিয়া ১২ মার্চের মহাসমাবেশ কর্মসূচিতে আঘাত এলে তা হবে গণতন্ত্রের ওপর আঘাত বলে উল্লেখ করে সরকারের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘বাধা দিয়ে, সংঘাত ডেকে কিংবা নাশকতা করে গণতন্ত্রকে বিপন্ন করবেন না। এর পরিণাম শুভ হবে না।’
খালেদা জিয়া শুক্রবার এক বিবৃতিতে সরকারের প্রতি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
গণমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি ১২ মার্চের ‘চলো চলো, ঢাকা চলো’ মহাসমাবেশে যোগ দেওয়ার আহ্বানও জানান দেশবাসীর প্রতি।
বিবৃতিতে খালেদা বলেন, ‘আমার এ আহ্বান কেবল বিএনপি, চারদলীয় জোট ও সমমনা বিভিন্ন দল-সংগঠনের প্রতিই নয়। এ আহ্বান শ্রেণী-পেশা, বয়স, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে গণতন্ত্রকামী প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিকের প্রতি।’
তিনি বলেন, ‘আমার আহ্বান, ভয়-ভীতি ও বাঁধা উপেক্ষা করে সারা দেশ থেকে দল-মত নির্বিশেষে আপনারা ঢাকায় এসে মহাসমাবেশে যোগ দিন।’
‘রাজধানীবাসীর প্রতিও আমার আহ্বান, আপনারাও এ কর্মসূচিতে বিপুলভাবে অংশ নিন।’ বলেন বিএনপির প্রধান।
খালেদা সরকারের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, ‘এর আগে বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনকারী জনগণের ওপর গুলি চালিয়ে আপনারা সাধারণ মানুষের জীবন নিয়েছেন। তবুও আমরা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করিনি। কিন্তু সকলের ধৈর্র্যেই একটা সীমা আছে। জনগণের ধৈর্য্যর বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে না দিলে আগামীতে
কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়া ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো বিকল্প থাকবে না।’ খালেদা জিয়া শুক্রবার এক বিবৃতিতে সরকারের প্রতি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
গণমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি ১২ মার্চের ‘চলো চলো, ঢাকা চলো’ মহাসমাবেশে যোগ দেওয়ার আহ্বানও জানান দেশবাসীর প্রতি।
বিবৃতিতে খালেদা বলেন, ‘আমার এ আহ্বান কেবল বিএনপি, চারদলীয় জোট ও সমমনা বিভিন্ন দল-সংগঠনের প্রতিই নয়। এ আহ্বান শ্রেণী-পেশা, বয়স, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে গণতন্ত্রকামী প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিকের প্রতি।’
তিনি বলেন, ‘আমার আহ্বান, ভয়-ভীতি ও বাঁধা উপেক্ষা করে সারা দেশ থেকে দল-মত নির্বিশেষে আপনারা ঢাকায় এসে মহাসমাবেশে যোগ দিন।’
‘রাজধানীবাসীর প্রতিও আমার আহ্বান, আপনারাও এ কর্মসূচিতে বিপুলভাবে অংশ নিন।’ বলেন বিএনপির প্রধান।
খালেদা সরকারের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, ‘এর আগে বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনকারী জনগণের ওপর গুলি চালিয়ে আপনারা সাধারণ মানুষের জীবন নিয়েছেন। তবুও আমরা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করিনি। কিন্তু সকলের ধৈর্র্যেই একটা সীমা আছে। জনগণের ধৈর্য্যর বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে না দিলে আগামীতে
‘তাই আমার আহ্বান, সকল অপতৎপরতা অবিলম্বে বন্ধ করুন। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে সহায়তা করুন।’ যোগ করেন খালেদা জিয়া।
বিএনপি ও চারদলীয় জোটের চলমান আন্দোলন সম্পর্কে খালেদা জিয়া বিবৃতিতে বলেন, ‘জনগণের ভোট এবং তাদের পছন্দের সরকার বেছে নেওয়ার অধিকার রক্ষার জন্য আমরা আন্দোলন করছি। আমরা আন্দোলন করছি, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংবিধানে পুনঃপ্রবর্তনের মাধ্যমে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ পন্থায় ক্ষমতা পরিবর্তনের ধারাকে রক্ষার জন্য।’
খালেদা বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন সরকারের সর্বমুখী ব্যর্থতা ও উৎপীড়নের প্রতিবাদে। জাতীয় স্বার্থ ও ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষার জন্য আমরা আন্দোলন করছি। আমরা আন্দোলন করছি, সন্ত্রাস, নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে এবং জনগণের জান-মাল-ইজ্জতের নিরাপত্তা বিধানের দাবিতে। শান্তি, আইনের শাসন এবং সমতার ভিত্তিতে সকল নাগরিকের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা সংগ্রাম করছি। দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি এবং গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির সংকটের প্রতিবাদে আন্দোলন করছি আমরা।’
দলীয়করণসহ নানামুখী অনিয়মে জাতীয় সংসদ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ ও সীমান্ত রক্ষা বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত বলে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া আরো বলেন, ‘এসব জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। আমাদের আন্দোলন বাক-ব্যক্তি-সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার রক্ষার দাবিতে। আমরা আন্দোলন করছি, শেয়ারবাজার লুণ্ঠনে নিঃশেষ হয়ে যাওয়া ৩৩ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর স্বার্থ রক্ষার জন্য।’
স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী আচরণ পরিহার করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও সরকারকে গণতান্ত্রিক পন্থায় পরিচালনার দাবিও জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘এ দাবিতেও আমরা আন্দোলন করছি।’
খালেদা জিয়া তার বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, ‘আমাদের এই চলমান আন্দোলনের অংশ হিসাবেই ‘ঢাকা চলো’ এবং রাজধানীতে মহাসমাবেশের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। আজ থেকে দু’মাস আগে গত ৯ জানুয়ারি চট্টগ্রামের পলোগ্রাউণ্ডের সুবিশাল জনসমুদ্রে আমি এ কর্মসূচি ঘোষণা করি এবং সারা দেশের জনসাধারণকে এতে শরিক হবার ডাক দেই।’
খালেদা জিয়া তার বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি আনন্দিত দেশের প্রায় সকল বিরোধীদল ও সামাজিক সংগঠন এ কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এবং সর্বস্তরের নাগরিকরাও স্বত:স্ফূর্ত সাড়া দিয়েছেন। এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানী থেকে নিভৃত পল্লী পর্যন্ত সারা দেশে সৃষ্টি হয়েছে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও প্রবল গণজাগরণ।’
খালেদা দাবি করেন, ‘এতে ইতিমধ্যেই গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে প্রচণ্ড ভীতি ও আতঙ্ক। কারণ এই কর্মসূচি আজ আর কেবল আমাদের কিংবা কোনো দলের নয়, জনগণের কর্মসূচিতে পরিণত হয়েছে এবং জনসমর্থনহীন সরকার নিজের দেশের জনগণকে ভয় পেতে শুরু করেছে। রাষ্ট্রশক্তির ছত্রছায়া এবং পেশীশক্তির ওপর নির্ভর করে তারা আত্মরক্ষা করতে চাইছে।’
‘আমরা শুরু থেকে এবং বার বার বলে আসছি যে, ১২ মার্চের কর্মসূচি হবে সম্পূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ। লাখ লাখ মানুষের কর্মসূচি কতোটা শান্তিপূর্ণ হতে পারে, তা আমরা বিভিন্ন অঞ্চল অভিমুখী সাম্প্রতিক রোডমার্চ ও মহাসমাবেশগুলোতে প্রমাণ করেছি। আমরা সন্ত্রাস-নৈরাজ্যে বিশ্বাস করি না। ১২ মার্চের কর্মসূচিতে আমরা আরেকবার সে নজির স্থাপন করতে চাই।’ বলেও জানান খালেদা জিয়া।
চারদলীয় জোট নেত্রী বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, ‘আমাদের কর্মসূচিতে বাধা-বিঘœ সৃষ্টি করা হবে না বলে প্রথম দিকে সরকার প্রকাশ্যে ঘোষণা করলেও কর্মসূচিকে ঘিরে ঢাকাসহ সারা দেশে সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে বিপুল সাড়া জাগতে দেখে ক্ষমতাসীনরা বেসামাল হয়ে পড়েছে। আমাদের কর্মসূচির আগে ও পরে শাসক জোট তাদের দলীয় কর্মসূচি ঘোষণা করেও স্বস্তিবোধ করতে পারছে না। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে শাসক দলের নিম্নস্তরের নেতা-কর্মীরা পর্যন্ত এখন ১২ মার্চের কর্মসূচির বিরুদ্ধে অশ্লীল ও আক্রমণাত্মক ভাষায় হুমকি দিতে শুরু করেছেন। বিরোধী দলের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষকে তারা ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন। দেশজুড়ে সর্বস্তরে সুপরিকল্পিতভাবে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিচ্ছেন।’
খালেদার অভিযোগ, ‘কেবল মুখের কথাই নয়, সরকার সারা দেশে ইতিমধ্যে ব্যাপক গণগ্রেফতার অভিযান শুরু করেছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাড়িতে, কর্মস্থলে, সংগঠনের অফিসে দিনে-রাতে হানা দিচ্ছে পুলিশ। পথে পথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে ঢাকামুখী জনস্রোতকে বাধা দেওয়ার ঘোষণা দেয়া হচ্ছে প্রকাশ্যেই। আমাদের সমাবেশের জন্য উপযুক্ত মাঠ বরাদ্দ সরকার করেনি। কর্মসূচি প্রচারের জন্য সময় মতো মাইক ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়নি।’
‘রাজধানীতে আবাসিক হোটেল ও খাবার দোকানগুলোকে কর্মসূচির সময় বন্ধ রাখার জন্য ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ বেআইনি প্রশাসনিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কর্মসূচির দিনে সমাবেশে যোগদানকারীদের চরম বিতর্কিত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সমাবেশে যোগ দিতে ইচ্ছুক নেতা-কর্মীদের যানবাহন ভাড়া না দিতে স্থানীয় প্রশাসন নির্দেশ দিচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, সমাবেশে যোগদানকারীদের দেখে নেওয়া হবে। এমনকি সরকারি দলের নেতারা ১২ মার্চের কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির জন্যও নিজেদের সরকারের কাছে প্রকাশ্যে দাবি জানাচ্ছে।’
গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মী ও নাগরিকদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘যাতে তারা কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারেন, সে জন্যই তাদের মুক্তি দিতে হবে।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ আহ্বান ও তাতে অংশগ্রহণ রাজনৈতিক দল ও নাগরিকদের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। সরকার আজ সেই অধিকারে নগ্ন হস্তক্ষেপ করছে। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে আমি এ সকল অপতৎপরতা অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
খালেদা বলেন, ‘সব চক্রান্ত ও বিঘœ উপেক্ষা করে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি সফল করার জন্য আমি সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
নেতা-কর্মীদেরকে সংঘাত, সংঘর্ষ, উস্কানি এড়িয়ে যে কোনো মূল্যে শান্তি বজায় রাখার নির্দেশও দেন খালেদা জিয়া।
পুলিশ, র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সকলের প্রতি খালেদা আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসেবে সরকারের বেআইনি ও অন্যায় নির্দেশ মেনে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা-বিঘœ সৃষ্টির তৎপরতা থেকে বিরত থাকবেন।
খালেদা তাদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, ‘আপনারাও এ দেশেরই নাগরিক। দেশের অবস্থা সম্পর্কে জানেন ও বোঝেন। জনগণের ওপর উৎপীড়নের পথ পরিহার করুন। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বেআইনিভাবে হেনস্তা করবেন না। আপনারা শান্তি বজায় রাখবেন এবং সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে জনগণের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় সহায়তা করবেন।’
বিএনপির চেয়ারপারসন তার বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করেন, ১২ মার্চের কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের আন্দোলন নতুন ধাপে উন্নীত হবে এবং সরকার জনগণের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শনে বাধ্য হবে।