॥রামু নিউজ ডেস্ক॥ চট্টগ্রামে ফেরিওয়ালা বেশধারী চোরচক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরা হলেন আমির হোসেন (৩৫) ও মো. মহিউদ্দিন (৩২)।
শনিবার দুপুরে নগরীর কোতয়ালী থানায় গ্রেপ্তার হওয়া দুই চোরকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। সেখানে চুরির কৌশলের বর্ণনা দেন দুই চোর। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টানা দুই দিন অভিযান পরিচালানোর পর শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে তাদের নগরীর স্টেশন রোড এলাকার হানিফ পরিবহনের কাউন্টারের সামনে থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে চুরি করা দেড় ভরি স্বর্ণালংকার ও একটি গোল্ড প্লেইটের নেকলেসও উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ঢাকাকেন্দ্রিক ফেরিওয়ালা বেশধারী এ চোরচক্র নারায়ণগঞ্জের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ দেশের অনেক নামিদামি মানুষের বাসায় চুরি করেছে। তারা চট্টগ্রামে ২০-২৫টি ও সারাদেশে প্রায় দুই হাজার চুরির সঙ্গে জড়িত। নগরীর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সদীপ কুমার দাশ বাংলানিউজকে বলেন, গ্রেফতার হওয়া দুইজন সংঘবদ্ধ চোর দলের সদস্য। তারা দিনের বেলায় মুরগি, কসমেটিকসসহ বিভিন্ন কিছু ফেরি করে বিক্রির নামে তালাবদ্ধ বাসার ডোর লক ভেঙে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা পয়সা চুরি করে নিয়ে যায়।’ গ্রেপ্তার অভিযানে অংশ নেওয়া উপ-পরিদর্শক (এস আই) মো. নেজাম উদ্দিন জানান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি নগরীর কাপাসগোলা এলাকায় জনৈক সৈয়দুল ইসলামের বাসার প্রায় ছয় লাখ ৫৯ হাজার টাকার মালামাল চুরির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে এ চোরচক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। গ্রেফতারের পর তারা নগরীর বিভিন্ন বড় বড় চুরির ঘটনার সঙ্গে নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। মো. মহিউদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, তারা স্ক্র্যাপ, পুরনো কাগজ, মুরগি, শাকসবজি, কসমেটিকস ফেরি করে বিক্রি করেন। চার-পাঁচজন ফেরিওয়ালা একসঙ্গে বের হয়ে নির্দিষ্ট এলাকায় যান। কোনো অ্যাপার্টমেন্টে দারোয়ান না থাকলে তারা সহজেই ওই ভবনে উঠে যান। সুযোগ বুঝে স্ক্রু দিয়ে দরজার তালা খোলার চেষ্টা করেন। ভেতর থেকে আওয়াজ আসলে তারা তালা না খুলেই চলে যান। আর আওয়াজ না থাকলে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে মাত্র পাঁচ মিনিটে স্টিলের আলমিরা অথবা ওয়ারড্রোব ভেঙে টাকাপয়সা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে চম্পট দেন। তবে তারা ইলেকট্রনিকস কোনো আইটেমে কখনও হাত দেন না বলে মহিউদ্দিন জানান। গ্রেফতার হওয়া আমির হোসেন ও মহিউদ্দিন জানিয়েছেন, তারা চুরির সময় ফেরি নিয়ে বাইরে থাকেন। গ্রুপের অন্যরা ভেতরে যান। হোসেন, হাশেম আর রানা নামে তিনজন তাদের দলনেতা এবং তাদের নেতৃত্বে তিন-চারটি গ্রুপ রয়েছে বলে তারা জানান। মহিউদ্দিন বলেন, ‘হোসেন, হাশেম আর রানা ছোটবেলা থেকেই চুরির সঙ্গে জড়িত। ২০ থেকে ২২ বছর ধরে তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ফেরিওয়ালার বেশে চুরি করছে। এরা বেশ কয়েকবার গ্রেফতারও হয়েছে।’ আমির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি আগে ঢাকায় ফলের ব্যবসা করতাম। এক বছর আগে হোসেন আর রানা আমাকে চুরির পেশায় নিয়ে আসে।’ আর মহিউদ্দিন জানান, তিনি এখনও অটোরিকসা চালান। সাত মাস আগে চোরের দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তার কাজ মূলত চোরদের গাড়িতে করে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাওয়া। উপপরিদর্শক (এসআই) নেজামউদ্দিন বলেন, ‘আমির হোসেন ও মহিউদ্দিন দুই জনই প্রশিক্ষিত এবং অভিজ্ঞ চোর। নিজেদের বাঁচাতে তারা অন্যদের উপর সব দোষ চাপিয়ে নিজেরা ভাল সাজতে চাইছে।’ আমির হোসেন জানান, এক বছর আগে নারায়নগঞ্জের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর বাসায় চুরি করে তারা প্রায় ৭০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে গিয়েছিল। এ মামলায় গ্রেফতার হয়ে কয়েকজন কিছুদিন জেলেও ছিলেন। তবে তিনি নিজে ওই ঘটনায় ছিলেন না বলে দাবি করেন। এসআই নেজামউদ্দিন জানান, চোরের দল এর আগেও চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার এলাকায় পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তা শুক্লা সাহার বাসায় চুরি করেছে। সিএমপির সিভিল কর্মকর্তা চন্দন কান্তি দাশের বাসায় চুরি করেছে। এ বিষয়ে চোর মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘কর্নেল, আইজি, মন্ত্রী-মিনিস্টার আমাদের কাছে কিছুই না। শুধু বাসায় তালা থাকলেই হল।’ সর্বশেষ গত ৭ মার্চ কক্সবাজার বেড়াতে গিয়ে ফেরিওয়ালার বেশে দুটি বাসায় চুরি করেছে। এসব চুরির মালামাল নিয়ে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকায় পালিয়ে যাবার পথে পাঁচজনের মধ্যে দুইজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। মহিউদ্দিনের ভাষ্য অনুযায়ী, তারা চুরির পর ঢাকার তাঁতীবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী আসলামের কাছে স্বর্ণালংকার বিক্রি করেন। ওসি সদীপ কুমার দাশ বলেন, ‘চোরের দলের কাজ দিনের বেলায় চুরি করা। দিনে তালাবদ্ধ ঘরে চুরি করলে পুলিশ কিংবা জনতার হাতে ধরা পড়ার আশঙ্কা থাকে না।’ তিনি জানান, নগরীর কোতয়ালী থানায় ছয়টি, খুলশীতে তিনটি, পাঁচলাইশে তিনটি, কক্সবাজার সদর থানায় দুটি ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে একটি চুরির মামলা তদন্তাধীন আছে। এ চোরচক্রই এসব চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে ধারণা করছেন তিনি। এস আই নেজামউদ্দিন জানান, দুজনকে কাপাসগোলায় চুরির ঘটনায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এছাড়া আদালতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। | |
শনিবার, ১০ মার্চ, ২০১২
চট্টগ্রামে ফেরিওয়ালা বেশধারী দুই চোর গ্রেফতার
এক সপ্তাহে ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের নকশা অনুমোদন দীর্ঘ ১১ মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু
মহসীন শেখ॥ দীর্ঘ এগার মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানীর ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ...
-
হাফেজ মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুর ॥ মৃত্যু অবধারিত সত্য একটি বিষয়। যারাই জন্ম গ্রহণ করে তারা অবশ্যই এ সত্যের মুখোমুখি হতে বাধ্য। এ প্রসঙ্গে আল্...
-
মহসীন শেখ, কক্সবাজার ॥ কক্সবাজারের সর্বস্থরের মুসলমান সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে বেড়াতে আসা ধর্মপ্রাণ পর্যটকদের ...