॥ক্রাইম রিপোর্টার ॥
কক্সবাজারে গত বছরের ৩১ অক্টোবর যুবদলের সমাবেশে কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট মোয়াজ্জেম আলালের উপর গুলীবর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত পাল্টাপাল্টি দুটি মামলায় বিএনপি-যুবদল ও ছাত্রদলের ৩০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়েছে। রবিবার আদালতে চার্জ গঠন হয়েছে। চার্জ গঠনের ধার্য্য দিনে আদালতে উপস্থিত না থাকায় কক্সবাজার সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান
ও মহিলা দলনেত্রী নাছিমা আকতার বকুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ারা জারি হয়েছে। কক্সবাজারের দ্রুত বিচারাদালতের বিচারক মীর সাব্বির আলী এই আদেশ দেন।কক্সবাজারে গত বছরের ৩১ অক্টোবর যুবদলের সমাবেশে কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট মোয়াজ্জেম আলালের উপর গুলীবর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত পাল্টাপাল্টি দুটি মামলায় বিএনপি-যুবদল ও ছাত্রদলের ৩০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়েছে। রবিবার আদালতে চার্জ গঠন হয়েছে। চার্জ গঠনের ধার্য্য দিনে আদালতে উপস্থিত না থাকায় কক্সবাজার সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান
সূত্রে জানায়, কক্সবাজার জেলা বিএনপি কার্যালয় প্রাঙ্গণে গত ৩১ অক্টোবর বিকালে আয়োজিত যুবদলের সমাবেশে কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বক্তব্য প্রদানকালে তাকে ল্য করে বিএনপির একাংশের সশস্ত্র ক্যাডারেরা গুলীবর্ষণ করে। ঘটনার পর পুলিশসহ যুবদল কর্মীরা ধাওয়া করে সন্ত্রাসী মোহাম্মদ রফিক ওরফে ঠাকুর রফিককে একটি তাজা গুলীসহ আটক করে। এই ঘটনায় জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর আশরাফুল হুদা ছিদ্দিকী জামসেদ বাদী হয়ে বিএনপি-যুবদল-ছাত্রদলের একাংশের ৯ জনের বিুরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। অস্ত্র ও দ্রুত বিচার আইনের ধারায় ১ নভেম্বর বিকালে মামলাটি কক্সবাজার সদর মডেল থানায় রেকর্ড করা হয় (মামলা নং ৪, তারিখ ১ নভেম্বর ২০১১)। মামলায় আরো ৫/৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়। ঘটনার পরিকল্পনাকারী উলেখ করা হয় সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাছিমা আকতার বকুল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি অধ্যাপক আজিজুর রহমান এবং জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরীকে। এই মামলায় পুলিশ পরিকল্পনাকারীদের নাম বাদ দিয়ে ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। মামলার আসামীরা হলেন মোহাম্মদ রফিক প্রকাশ ঠাকুর রফিক, শামসুল ইসলাম রাসেল, মহিউদ্দিন মোহাম্মদ তারেক, শাহাবউদ্দিন, ইউসুফ, মোশাররফ হোসেন, মোহাম্মদ তারেক, গিয়াসউদ্দিন আফসেল ও আমিনুল ইসলাম মুকুল। এদিকে এই মামলার অভিযুক্তদের তালিকা থেকে ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা, বিএনপি নেতা ইউসুফ বদরী ও অধ্যাপক আজিজের নাম বাদ দিয়ে বাদীর অনুপস্থিতিতে এই চার্জশিট আদালতে প্রেরণ করা হলে বাদীপ নারাজি পিটিশন দেওয়ার জন্য সময় প্রার্থনা করে। আদালত ২১ নভেম্বর পর্যন্ত সময় মঞ্জুর করে। পরে পুলিশের এই চার্জশিটের বিরুদ্ধে মামলার বাদী আদালতে নারাজি দিলে পরে ১২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়।
অন্যদিকে এই মামলা রেকর্ডের পরদিন ২ নভেম্বর রাতে বিএনপি-যুবদল ছাত্রদলের আরেকাংশের ১৮ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত পাল্টা মামলাতেও সকল আসামীকে অভিযুক্ত করে পুলিশ আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। এই কাউন্টার মামলার আসামীরা হলেন, কক্সবাজার পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মোহাম্মদ আলী, শহর যুবদলের আহবায়ক ও জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর আশরাফুল হুদা ছিদ্দিকী জামসেদ, জেলা যুবদল সভাপতি এডভোকেট মোহাম্মদ আবদুলাহ, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নেজামউদ্দিন, প্রচার সম্পাদক সরওয়ার রোমন, শহর যুবদল নেতা মাসুদুর রহমান মাসুদ, সদর উপজেলা ছাত্রদল আহবায়ক নাছিরউদ্দিন, কক্সবাজার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম, যুবদল নেতা গিয়াসউদ্দিন, ফরিদুল আলম, জেলা ছাত্রদল নেতা সানাউলাহ আবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদ আবেদীন সবুজ, শহর ছাত্রদল আহবায়ক অলি আহমদ জিয়া, সাবেক ছাত্রদল নেতা দিদারুল আলম, সিটি ডিগ্রী কলেজ সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান নয়ন, আইন কলেজ সভাপতি মনিরউদ্দিন, যুবদল নেতা বাহাদুর ও পারভেজ। সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আকতার বকুলের ভাই ও যুবদলের একাংশের নেতা আনোয়ার বাদী হয়ে এই কাউন্টার মামলাটি রেকর্ড করেন। প্রথম মামলার ২ দিন পর দ্বিতীয় মামলার ১৮ আসামীর বিরুদ্ধেও চার্জশিট দেয় পুলিশ। গতকাল রোববার উভয় মামলার সকল আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠিত হয়। অভিযোগ গঠনকালে উভয় মামলার ৩০ আসামীর মধ্যে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাছিমা ছাড়া সকলেই উপস্থিত ছিলেন। ফলে আদালত ২৯ আসামীকে জামিন দিলেও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা দলনেত্রী নাছিমা আকতার বকুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ারা জারির নির্দেশ দেন। কক্সবাজারের দ্রুত বিচারাদালতের বিচারক মীর সাব্বির আলী রবিবার জনাকীর্ণ আদালতে এই আদেশ দেন।