রবিবার, ১১ মার্চ, ২০১২

আমি কোনো পলিটিক্সে নেই: সরকারি বাড়ি ফেরত দিয়ে শেখ রেহানা

॥রামু নিউজ ডেস্ক॥  সরকারের দেওয়া বাড়িটি আবার সরকারকেই ফেরত দিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা। শনিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে ধানমণ্ডি এলাকার ওই বাড়িটি হস্তান্তর করেন তিনি। 

বড় বোন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনেই বাড়িটি ফেরত দেওয়ার দলিলে সই করেন শেখ রেহানা।

২০০১ সালে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার বাড়ি নং- ২১ (নতুন), সড়ক নং-৬ (৪১/এ পুরাতন) ঠিকানায় এক বিঘার এই পরিত্যক্ত বাড়িটি প্রতীকী ম‍ূল্যে শেখ রেহানাকে দেওয়া হয়।

এরই মধ্যে ধানমন্ডি থানা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বাড়িটি।  

হস্তান্তরের সময় শেখ রেহানা বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, এমন বাড়ি আমার কোনো প্রয়োজনে আসছে না। তাই এটি ফেরত দিলাম।’ 

আবেগ জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘যখন একা ছিলাম তখন কেউ ছিলো না। লেখাপড়াও শেষ করতে পারিনি। এখন এমন বাড়ি আমার প্রয়োজন নেই।’ 

তিনি বলেন, ‘আমি কোনো পলিটিক্সে (রাজনীতি) নেই। এই নিয়ে আবার কেস (মামলা) খেতে হতে পারে। এর মধ্যে আমি নেই।’ 

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাড়িটি হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে আমরা ভারমুক্ত হলাম।’ 

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান, পুলিশের আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, গণপূর্ত সচিবসহ সরকারের ও দলের সংশ্লিষ্টরা বাড়িটি হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন। 

আইজিপি বলেন, জমিটি আমরা ফেরত দিতে চেয়েছিলাম কিন্ত শেখ রেহানা তা নিতে চাননি। অনেক আগেই ফেরত দিয়ে দিয়েছেন। এখন আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর হলো।’ 

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী (মিডিয়া) মাহবুবুল হক শাকিল নিউজকে এসব কথা জানান। 

উল্লেখ্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করে। তখন বিদেশে অবস্থান করায় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা প্রাণে বেঁচে যান। মা-বাবা-ভাই-আত্মীয়-স্বজন সব হারিয়ে শেখ রেহানা তখন এতিম। এতটুকু আশ্রয়ও ছিল না।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। তৎকালীন সরকারের মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকার ২০০১ সালের ১১ জুলাই ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার এক বিঘার একটি পরিত্যক্ত বাড়ি (বাড়ি নং ৪১/এ (পুরাতন) ২১ (নতুন), সড়ক নং-৬) প্রতীকী মূল্যে জাতির পিতার কন্যা হিসেবে শেখ রেহানার নিকট বিক্রয় দলিল সম্পাদন, রেজিস্ট্রেশন ও নামজারি করা হয়।

শেখ রেহানার কোনো বাড়িঘর না থাকায় সরকার তাঁকে এই বাড়িটি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর তার স্ত্রী খালেদা জিয়া ও সন্তানদের সরকার ১৯৮১ সালে যেভাবে গুলশানে ৩২ কাঠার পরিত্যক্ত একটি বাড়ি ১০১ টাকায় বিক্রি করেছিল। খালেদা জিয়ার গুলশানের বাড়িটির মতই একইভাবে সরকার এই বাড়িটি শেখ রেহানাকে দিয়েছিলো। 

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর তৎকালীন সরকার বিনা নোটিশে ২০০২ সালের জানুয়ারি মাসে শেখ রেহানার বাড়িটি দখল করে। বাড়িটিতে কর্মরত  ৯ জন ব্যক্তিকে গ্রেফতার এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়।

এর পর শেখ রেহানার মনোনীত প্রতিনিধি বেগম মঞ্জিলা ফারুক বাড়িটি হস্তান্তরের জন্য হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। রিট মামলা থাকা সত্ত্বেও সরকার ২০০৩ সালের ২৭ মার্চ বাড়িটি ডিএমপিকে বরাদ্দ দিয়ে দখল বুঝিয়ে দেয়।

সরকার ২০০৫ সালের ২৭ জুন শেখ রেহানাকে দেয়া এই বাড়িটিতে ধানমন্ডি থানার কার্যালয়ে স্থাপন করে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সেদিন এই থানা ভবন উদ্বোধন করেন।

পরদিন ২৮ জুন তথ্য অধিদফতর সূত্রে প্রকাশিত খবরে জানানো হয় ‘ধানমন্ডি থানা ধানমন্ডি ৬নং রোডে একটি ভাড়া বাড়িতে স্থানান্তর করা হয়েছে।’ 

এরপর তৎকালীন সরকার ৫ সেপ্টেম্বর শেখ রেহানার নামে বরাদ্দকৃত বাড়ী (যা পরবর্তীতে ধানমন্ডি থানা) সেখান থেকে এক কাঠা জমি প্রতিবেশী তৎকালীন বিচারপতি কে এম হাসানকে বরাদ্দ দেয়।

পরবর্তীতে শেখ রেহানা হাইকোর্টের রিট মামলা প্রত্যাহার করে বাড়িটি সরকারকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

এই বাড়িতে স্থাপিত থানার পুলিশ জনগণের নিরাপত্তায় নিয়োজিত। জনগণের সেবার জন্য তিনি বাড়িটি সরকারের ফিরিয়ে দিলেন বলে শেখ রেহানা ঘনিষ্ঠজনদের জানিয়েছেন।

এক সপ্তাহে ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের নকশা অনুমোদন দীর্ঘ ১১ মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু

মহসীন শেখ॥   দীর্ঘ এগার মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানীর ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ...