শুক্রবার, ২৩ মার্চ, ২০১২

ফাইনালে ২ রানে হেরে গেল বাংলাদেশ

॥ রামু নিউজ স্পোর্টস ডেস্ক ॥   
এশিয়া কাপ ক্রিকেটের শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ২ রানে হেরে গেছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ২৩৬ রান করে পাকিস্তান। জবাবে সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের অর্ধশতকের পরও ৯ উইকেটে ২৩৪ রানে থেমে যায় বাংলাদেশ।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভালো সূচনা পায় বাংলাদেশ। নাজিমউদ্দিন নিজেকে গুটিয়ে রাখলেও শুরু থেকে স্বচ্ছন্দে খেলছিলেন তামিম ইকবাল। সপ্তদশ ওভারে ৬৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।

শহীদ আফ্রিদিকে এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে ইউনুস খানের হাতে ধরা পড়েন ৫২ বলে ১৬ রান করা নাজিম। ঐ ওভারেই ৪৮ বলে অর্ধশতকে পৌঁছান তামিম। টুর্নামেন্টে এটি তার চতুর্থ অর্ধশতক। অর্ধশতক উদযাপনের ভঙ্গিও ছিলো অভিনব। চার আঙ্গুল তুলে অর্ধশতকের সংখ্যা জানিয়ে দেন তামিম।

নাজিমের বিদায়ের পর রানের খাতা খোলার আগেই তাকে অনুসরণ করেন জহুরুল ইসলামও। তাই ভালো সূচনার পরও হঠাৎ করে অস্বস্তিতে পড়ে যায় বাংলাদেশ।

৭ বলের ব্যবধানে দুই উইকেট পড়ে যাওয়ায় সতর্ক হয়ে যান তামিম। দেখে-শুনেই খেলছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎই উমর গুলকে পুল করতে গিয়ে ইউনুসের হাতে ধরা পড়েন। ৬৮ বলে খেলা তামিমের ৬০ রানের ইনিংসে ৮টি চার।

তামিমের বিদায়ের পর বাংলাদেশকে রীতিমতো চেপে ধরেন পাকিস্তানের বোলাররা। ২৫ ও ২৬তম ওভারে টানা দুটি মেডেনও হয়।

নাসির হোসেন শুরু থেকে নড়বড়ে থাকলেও চার মেরে রানের খাতা খোলা সাকিব প্রথম থেকেই ছিলেন দারুণ আত্মবিশ্বাসী।

সাকিব ও নাসিরের ৮৯ রানের জুটি ভাঙ্গেন গুল। পুল করতে গিয়ে মিসবাহ-উল-হকের হাতে ধরা পড়ে শেষ হয় নাসিরের ৬৩ বলে করা ২৮ রানের ইনিংসটি।

তবে সাকিবের উপস্থিতি তখনো স্বপ্ন দেখাচ্ছিলো বাংলাদেশকে। কিন্তু দলীয় ১৭৯ রানে আইজাজ চিমার বলে সাকিব বোল্ড হয়ে গেলে চাপে পড়ে যায় স্বাগতিকরা। ৬৮ রান করা সাকিবের ৭২ বলের ইনিংসটি ৭টি চার ও একটি ছক্কায় সাজানো। এটি টুর্নামেন্টে তার তৃতীয় অর্ধশতক।

সাকিবের বিদায়ের পর অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম (৮ বলে ১০ রান) এবং মাশরাফি বিন মর্তুজার (৯ বলে ১৮ রান) দৃঢ়তায় আবার জয়ের আশায় উদ্বেল হয়ে ওঠে বাংলাদেশ।

শেষ ৩ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২৫ রান, আর শেষ ওভারে ৯।

কিন্তু চিমার করা শেষ ওভারে ৬ রানের বেশি নেয়া সম্ভব হয়নি স্বাগতিকদের। ৪৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে চিমাই পাকিস্তানের সেরা বোলার।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। দলীয় ১৬ রানেই নাসির জামশেদকে (৯) হারায় তারা। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে মাশরাফির স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে কাভারে মাহমুদুল্লাহকে সহজ ক্যাচ দেন জামশেদ।

পরের ওভারেই নাজমুল হোসেনের আঘাত। ইউনুস খানকে (১) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। মাশরাফি ও নাজমুলের নিখুঁত লাইন-লেন্থের বোলিংয়ে পাকিস্তান তখন বেশ অস্বস্তিতে।

দ্বাদশ ওভারে নাজমুলের বদলে বল করতে আসা আব্দুর রাজ্জাকের হিসেবী বোলিংয়ে অস্বস্তি বেড়ে যায় আরো। ৭ ওভারের প্রথম স্পেলে ৩টি মেডেনসহ মাত্র ১১ রানের বিনিময়ে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হাফিজকে (৪০) ফেরান রাজ্জাক।

এর আগেই অবশ্য নাসির হোসেনের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে যান পাকিস্তানের অধিনায়ক মিসবাহ। পয়েন্টের দিকে বল ঠেলে একটি রান নিতে চেয়েছিলেন মিসবাহ। কিন্তু ইতস্তত করে পিচের মাঝপথে গতি কমিয়ে দেন। সেটাই শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাঁড়ায় তার জন্য। সুযোগটা কাজে লাগাতে ভুল করেননি নাসির।

হাফিজের বিদায়ের সময় ২২তম ওভারে পাকিস্তানের স্কোর ছিলো ৭০/৪। এরপর ৫৯ রানের জুটি গড়ে পাকিস্তানকে লড়াইয়ে ফেরান উমর আকমল ও হাম্মাদ আজম। বাংলাদেশের জন্য বিপদজনক হয়ে ওঠা জুটিটা ভাঙ্গেন সাকিব আল হাসান।

সাকিবকে ¯¬¬গ সুইপ করতে চেয়েছিলেন আজম (৩০)। কিন্তু ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় তাকে। পরের ওভারেই আকমলকে (৩০) উইকেটরক্ষক মুশফিকের গ¬¬াভসবন্দী করেন মাহমুদুল্লাহ। এর আগে ২৯তম ওভারের শেষ বল করার সময় গোড়ালিতে চোট পান নাজমুল।

১৩৩ রানে প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে দিশেহারা পাকিস্তানকে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন শহীদ আফ্রিদি। ২৬তম ওভারে পঞ্চম বোলার হিসেবে এসে একটানা বল করে যাওয়া সাকিব ফেরান আফ্রিদিকে।

সাকিবের ফুলটস এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে নাসিরের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন ওয়ানডেতে দ্রুততম শতকের মালিক। মাত্র ২২ বলে চারটি চার ও একটি ছক্কাসহ ৩২ রান করেন আফ্রিদি।

এর পর সাঈদ আজমল (৪) ও উমর গুল (৪) দ্রুত বিদায় নিলে ২০৬/৯-এ পরিণত হয় পাকিস্তান। তবে শেষ ব্যাটসম্যান আইজাজ চিমার সঙ্গে সরফরাজ আহমেদের ৩০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি ২৩৬ রানের সংগ্রহ এনে দেয় তাদের।

এর মধ্যে শাহাদাত হোসেনের করা শেষ ওভারে ১৯ রান তুলে নেন সরফরাজ। ৪৬ রানে অপরাজিত সরফরাজই পাকিস্তানের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান।

বাংলাদেশের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন রাজ্জাক, সাকিব ও মাশরাফি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ২৩৬/৯ (হাফিজ ৪০, জামশেদ ৯, ইউনুস ১, মিসবাহ ১৩, আকমল ৩০, আজম ৩০, আফ্রিদি ৩২, সরফরাজ ৪৬*, গুল ৪, আজমল ৪, চিমা ৯*; রাজ্জাক ২/২৬, সাকিব ২/৩৯, মাশরাফি ২/৪৮, মাহমুদুল¬¬াহ ১/১৪, নাজমুল ১/৩৬, শাহাদাত ০/৬৩)

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৩৪/৮ (তামিম ৬০, নাজিম ১৬, জহুরুল ০, নাসির ২৮, সাকিব ৬৮, মুশফিক ১০, মাহমুদুল্ল¬াহ ১৭*, মাশরাফি ১৮, রাজ্জাক ৬, শাহাদাত ০*; চিমা ৩/৪৬, আজমল ২/৪০, গুল ২/৬৫, আফ্রিদি ১/২৮, আজম ০/২০, হাফিজ ০/৩০)

ফল: পাকিস্তান ২ রানে জয়ী

ম্যাচ সেরা: শহীদ আফ্রিদি

টুর্নামেন্ট সেরা: সাকিব আল হাসান।

এক সপ্তাহে ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের নকশা অনুমোদন দীর্ঘ ১১ মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু

মহসীন শেখ॥   দীর্ঘ এগার মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানীর ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ...