॥ রামু নিউজ ডেস্ক ॥
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর যুদ্ধাপরাধের মামলায় প্রসিকিউশন জেরা ছাড়াই ৪৬ জন সাক্ষীর তদন্তকালীন জবানবন্দি সাক্ষ্য হিসেবে নথিভুক্ত করার যে আবেদন করেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিরোধিতা করেছে আসামিপক্ষ। এ বিষয়ে আদেশের জন্য বৃহস্পতিবার দিন রেখেছে ট্রাইব্যুনাল।
প্রসিকিউটর হায়দার আলী গত বুধবার এক আবেদনে বলেন, এ মামলার ১৯ জন চাক্ষুষ সাক্ষীকে হাজির করা দুরূহ, ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ। ঊষা রানী মালাকার নামে ৭৮ বছর বয়সী এক সাক্ষী খুবই অসুস্থ। আরেক সাক্ষী সুখরঞ্জন বালী গত চার মাস ধরে নিখোঁজ। অন্তত তিনজন সাক্ষী ভারতে চলে গেছেন বলেও প্রসিকিউটরদের ধারণা। এছাড়া আসামির পক্ষে একটি গোষ্ঠী পিরোজপুরে সাক্ষীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে অভিযোগ করে হায়দার আলী বলেন, ১৯ জন সাক্ষী তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে যে জবানবন্দি দিয়েছিলেন, এই পরিস্থিতিতে সেটিকেই ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণ করা হোক। এছাড়া ২৭ জন গৌণ সাক্ষীর ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান তিনি।
বুধবার এর বিরোধিতা করে সাঈদীর আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ওই সাক্ষীদের মধ্যে কয়েকজন তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে জবানবন্দি দিয়েছেন তা হুবুহু একই রকম। “এটা কী করে সম্ভব হয়”, প্রশ্ন রাখেন তিনি।
তদন্ত কর্মকতা ওই জবানবন্দি ঠিকমতো লেখেননি- এমন মন্তব্য করে তা সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণের বিরোধিতা করেন এই আইনজীবী। তিনি বলেন, প্রসিকিউশন তার মক্কেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে এখন সাক্ষী হাজিরে ব্যর্থ হচ্ছে। আসামিপক্ষের বক্তব্য শোনার পর ট্রাইব্যুনাল প্রধান নিজামুল হক জানান, প্রসিকিউশনের আবেদনের বিষয়ে বৃহস্পতিবার আদেশ দেওয়া হবে।
গতবছরের ৩ অক্টোবর এই ট্রাইব্যুনালে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে জামায়াতের নায়েবে আমির সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়। ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেপ্তার করা হয় সাবেক সংসদ সদস্য সাঈদীকে। ২০১১ সালের ১৪ জুলাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। সাঈদী ছাড়াও জামায়াতের পাঁচ শীর্ষ নেতা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার রয়েছেন। তারা হলেন- দলের সাবেক আমির গোলাম আযম, বর্তমান আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্ল¬¬া।
যুদ্ধাপরাধের মামলায় এই পর্যন্ত দুই বিএনপি নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী আটক থাকলেও জিয়াউর রহমান আমলের মন্ত্রী আব্দুল আলীম শর্তসাপেক্ষে জামিনে রয়েছেন।