॥ সৈয়দুল কাদের ॥
জাতীয় সংসদে সেই কাঙ্খিত বিরোধী যোগদান করলেও এমপিদের বক্তব্য শুনে জাতি কি জানতে পেরেছে তাই এখন ভেবে দেখার সময় এসেছে। নবাগত কিছু মহিলা এমপির বক্তব্যের ভাষা শুনে মানুষ রীতিমত বিভ্রতবোধ করেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকেই টেলিভিশনে সংসদ অধিবেশন দেখতে সংকোচবোধ
করছেন। সংসদে কথা বলতে না দেয়ার অভিযোগ তোলে টানা ৮৩ কার্য দিবস অনুপস্থিত থাকার পর সম্প্রতি সংসদে যোগদান করে তাদের মানসিকতার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। এদের বক্তব্য শুনে অনেক অভিভাবক তাদের ছেলে মেয়েদের সংসদ অধিবেশনের কোন অনুষ্টান শুনা থেকে বিরত রাখবে। এতে এক ধাপ এগিয়ে আছে অনির্বাচিত মহিলা এমপিরা। তাদের জনগণের প্রতি কোন দায়বদ্ধতা না থাকলেও নির্বাচিত কয়েক জন পুরুষ এমপি ওই মহিলা এমপিদের ছেড়ে কথা বলছেনা। তাদের বক্তব্য শুনে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেত্রী হাত তালি দিয়ে তাদের বক্তব্যকে স্বাগত জানাচ্ছেন। বিরোধী দলীয় মহিলা সংসদ সদস্য নাম (প্রকাশ করা হলনা) ১৯ মার্চ জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আলোচনা করতে গিয়ে বলেন সরকারি দলের কিছু এমপির কাপড় খুলে নেওয়া প্রয়োজন। এ বক্তব্যের জবাবে রাজশাহী থেকে নির্বাচত সরকার দলীয় এক এমপি বলেন একজন নারী কোন পরিস্থিতিতে একজন সক্ষম পুরুষের কাপড় খুলতে চায় তা করো অজানা নয়। (২০ মার্চ প্রথম আলোতেও এ সংক্রান্ত সংবাদ রয়েছে) একজন মনোনীত অপরজন নির্বাচিত, এই দুই সাংসদ আসলে জাতিকে কি বুঝাতে চেয়েছেন ? তবে ওই বিরোধী দলের নারী সাংসদ প্রায় সময় এ ধরণের উস্কানিমুলক অশ্লীল বক্তব্য টকশো সহ বিভিন্ন স্থানে দিয়ে থাকেন। একজন মনোনীত এমপি হয়ে নির্বাচিত এমপিদের কাপড় খোলার চেষ্টা করা কিসের ইঙ্গিত বহন করে এবং পাল্টা জবাবেও সরকার দলীয় সাংসদ কেন কাপড় খোলার চেষ্টা তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। এ সমস্ত অশ্লীল ভাষা ও অসংসদীয় কথা শুনার জন্য জনগণ এমপি নির্বাচিত করেনি। সংসদে বিরোধী দলকে কথা বলতে না দেওয়ার বিষয়টি কতটুকু সত্য তা তাদের বক্তব্যেই বুঝা যায়। যা কখনো মাঠে ময়দানে ও জনসভায় ও শুনা যায়না এ ধরণের উক্তি সংসদে করা যায় এবং মনখোলে সব বলা যায় তাদের বক্তব্যে তা প্রামাণিত হয়। যারা বিরোধী দলের একাধীক মহাসমাবেশ ও লংমার্চে বক্তদেয়ার সুযোগ পাননা তারাই সংসদে অনর্গল বক্তব্য রেখেছেন। দলীয় সভায় বক্তব্য দেয়ার অধিকার থাকলেও সুযোগ পাওয়ার যোগ্যতা নেই। সংসদের সুযোগটি কাজে লাগিয়ে অনর্গল বলে যাচ্ছেন নানা কল্প কাহিনী। জাতিয় নেত্রীদের চরিত্র হরণ সহ তারা করছেননা এমন কিছু নেই। বিএনপি দলীয় মহিলা এমপি সৈয়দা আশরাপিয়া সোলতানা পাপিয়ার বক্তব্য শুনে অনেকেই বিষ্মিত হয়েছেন। তিনি বলেছেন এরশাদের কোলে চড়ে হাসিনা ১৯৮৬ সালে বিরোধী দলীয় নেতা হয়েছিলেন আর ২০০৮ সালে মঈন ফখর উদ্দিনের কোলে চড়ে তিনি ক্ষমতায় এসেছেন। শৈশব কালে কতজনের কোলে চড়েছেন। ওই এমপি কখনো ভেবে দেখেনি নিজের কতটুকু যোগ্যতা রয়েছে। তিনি কার উদ্দেশ্যে কাকে খুশি করতে এসব কঠাক্ষ্যমুলক বক্তব্য দিচ্ছেন। দলের সভা নেত্রীর মন জয় করতে জাতির জনকের কন্যাকেও তিনি ছেড়ে কথা বলছেননা। সজীব ওয়াজেদ জয়কেও তুচ্ছ করে কথা বলছেন। তারেক-কোকোর অনর্গল সুনাম করে গেলেও একটি বারের জন্যও বলেননি বর্তমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে মেয়েরা কে কি করে। তা সমগ্র দেশবাসি জানলেও ওই মহিলা এমপি জানেন না। কার শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটুকু তাও তিনি জানেন না। তিনি শেখ হাসিনা কার কার কোলে চড়েছেন সব জানলেও বেগম জিয়া কারো কোলে চড়ে ছিলেন কিনা তা জানেন না। না জানলে ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদের কাছ থেকে জেনে নিতে পারতেন। দেশনেত্রী বেগম জিয়া কি করেছেন বা করেন নাই ওই ব্যারিষ্টারের লেখা একটি বইতে তিনি সবই উল্লেখ করেছেন। বেগম জিয়া আর্শিবাদে মনোনীত এমপি হয়ে এ ধরণের বক্তব্যে নতুন প্রজন্ম বিভ্রত হয়েছে। নতুন প্রজন্মের কয়েকজন এমপি ইতিহাসবিদের মত মনগড়া কথা বলেন জাতীয় সংসদে। এদের অনেকের জন্ম স্বাধীনতার পরে হলেও এমন ভাবে বলেন যেন মেজর জিয়া তাদের সামনেই স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছেন। সংসদ সদস্যদের এ ধরণের বিভ্রান্তিমুলক বক্তব্যের ব্যাপারে একজন প্রয়াত শিক্ষক যিনি যুদ্ধকালীন সময়ে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মছজিদ্দা আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমএ মামুন বলেছিলেন দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের মিথ্যাচার ও স্বার্থ সিদ্ধির বক্তব্যে শুধু সমগ্র জাতি বিভ্রত হবে। সংখ্যাগরিষ্ট মানুষ ওই মিথ্যার বেসতি হয়ে পড়বে। এই মিথ্যাচারের কারণে রাজনীতিতে প্রবেশ করবে অশ্লীলতা। যারা এতে পারদর্শী হবে তারাই দলীয় প্রধানের আস্তা ভাজন হবে।
আজ যেভাবে জাতীয় সংসদসহ সর্বত্র মিথ্যাচার অশ্লীল বাক্যে জর্জরিত হচ্ছে। এতে সেই প্রয়াত শিক্ষককের ভবিষ্যত বাণী অক্ষরে অক্ষরে সত্য বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। যারা বেশী অশ্লীল বক্তব্য দিচ্ছেন তারাই পাচ্ছেন দলীয় প্রধানের আনুকুল্য।