মঙ্গলবার, ২০ মার্চ, ২০১২

অপরিকল্পিত নির্মাণ : চালু করা যায়নি বড়গর্জই খালে নির্মিত স্লুইস গেইট ॥ রামুর গর্জনীয়ায় পানির জন্য দেড় হাজার কৃষকের হাহাকার

॥ খালেদ শহীদ ॥   
কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের থোয়াইংগাকাটা এলাকায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বড়গর্জই খালে স্লুইচ গেইটটি তিন বছরেও চালু করা যায়নি। সঠিক পরিকল্পনায় নির্মিত না হওয়ায়, স্লুইচগেটটি কৃষকদের কোন সুফল বয়ে আনতে পারছে না। বোরো চাষাবাদ আরম্ভ হয়ে যাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে পানির জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের থোয়াইংগাকাটা এলাকার প্রায় ১০০০ একর কৃষি জমির চাষাবাদের পানির চাহিদা মেটাতে
২০০৮-৯ সালে বড়গর্জই খালে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৬২ হাজার টাকা ব্যয়ে স্লুইচগেটটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নির্মাণের পর থেকেই স্লুইচগেটটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এভাবে পড়ে থাকায় সেটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অপরিকল্পিত নির্মান প্রক্রিয়ায় স্লুইচগেট দিয়ে পানি প্রবাহিত না হয়ে, পাশ দিয়ে খালের পাড় ভেঙ্গে বর্ষাকালে পানি প্রবাহিত হয়। এতে ভেস্তে গেছে স্লুইচগেট নির্মাণের উদ্দেশ্য। এলাকার কৃষকরা উদ্ধর্তন কর্তৃপে অপরিকল্পিত পরিকল্পনাকেই দায়ী করছেন। ফলে থোয়াইংগাকাটাসহ আশপাশ এলাকার প্রায় ২ হাজার একর বোরো চাষাবাদের কৃষি জমি অনাবাদি থেকে যাচ্ছে ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ রামু উপজেলার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮-৯ অর্থ বছরে উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের থোয়াইংগাকাটা এলাকার বড়গর্জই খালের ওপর ‘খোন্দকার বিজিনেস ইন্টারন্যাশনাল’ নামে এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ১ কোটি ৫৮ লাখ ৬২ হাজার টাকা ব্যয়ে স্লুইচগেটটি নির্মাণ  করে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, বড়গর্জই খালের পানি না পেয়ে গর্জনিয়া ইউনিয়নের থোয়াইংগাকাটা, বড়বিল, থিমছড়ি, উত্তর ঝুমছড়ি, নজু মাতব্বর পাড়া এলাকার প্রায় ২ হাজার একর তিন ফসলি কৃষি জমি চাষাবাদে আনা যাচ্ছে না। শুষ্ক মৌসুমে এখানে উৎপাদন হয় উলেখযোগ্য পরিমাণ ধান ও মৌসুমি সবজি। এলাকাবাসীর চাষাবাদে পানির চাহিদা পূরণ ও বড়গর্জই খালের ভাঙ্গন রোধ করতে স্লুইচগেটটি নির্মাণ করা হয়। এটি সচল থাকলে উজানের পানি ধরে রেখে স্থানীয় কৃষকরা নির্বিঘেœ কৃষিকাজ করতে পারত। কিন্তু স্লুইচগেটটি শুরু থেকেই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় সে উদ্দেশ্য ভেস্তে গেছে।
থোয়াইংগাকাটা এলাকার কৃষক বদিউল আলম, আবুল কালাম ও মোক্তার আহম্মদ জানান, ওই খালের পানির ওপর ভর করে উৎপাদিত ফসলে রুটি-রুজি চলে। পানির অভাবে অনেক কৃষকের জমি অনাবাদি থেকে যাচ্ছে। মিয়া মোহাম্মদ বাদশা নামে আরেক কৃষক জানান, স্লুইচগেট নির্মাণ কাজ দেখে এলাকার কৃষকরা আশার বুক বেঁধেছিল। কিন্তু জন্ম থেকে অকোজো হয়ে থাকায় আশার চাইতে হতাশায় তাদের ডুবিয়ে রেখেছে। অপরিকল্পিত পরিকল্পনায় বড়গর্জই খালের স্লুইচগেটটি নির্মিত হওয়ায় আর্শিবাদের চেয়ে এটি এখন কৃষকের অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গর্জনিয়া কমিউনিটি পুলিশের সাধারণ সম্পাদক, এলাকার কৃষিজীবি মহিবুল্লাহ চৌধুরী জিল্লু জানান, স্লুইচগেটটি নির্মাণের পূর্বে খালটি খনন ও দু’পাশের পাড়ে ব্লক বাঁধ দেয়া উচিত ছিল। এখন বর্ষায় খালে পানি প্রবাহিত হলে অকার্যকর এই স্লুইচগেটের পাশ দিয়ে, খালের পাড় ও জমি ভেঙ্গে পানি প্রবাহিত হয়। এই অবস্থায় অনেক কৃষি জমি খালের মধ্যে ভেঙ্গে গেছে। শুষ্ক মৌসুমে এখানকার কৃষকদের মধ্যে পানির জন্য মারামারি হয়। অনেকেই নিজের প্রভাব খাটিয়ে খালে বাঁধ দিয়ে পানি দখল করে রাখে।
গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তৈয়ব উল্লাহ চৌধুরী জানান, বড়গর্জই খালের ওপর স্লুইচগেটটি নির্মাণ পরিকল্পনায় ভুল ছিল। স্লুইচগেটটি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ না করে, স্থানীয় শত শত কৃষকের দাবীতে ওই স্থানে রাবার ড্যাম নির্মানের প্রস্তাব দিয়েছি। এখানে রাবার ড্যাম নির্মিত হলে ৫ গ্রামের ১২ শত থেকে দেড় হাজার কৃষক উপকৃত হবে। চাষাবাদের অনুকূলে আসবে প্রায় দু’হাজার একর তিন ফসলি কৃষি জমি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ খুরশীদ আলী চৌধুরী জানান, ২০০৮-৯ সালে স্লুইচগেটটি নির্মাণ করা হয়। ওই স্থানে স্লুইচগেটটি নির্মাণ করা উচিত হয়নি। ওই খালে স্লুইচগেট নির্মাণে না করে রাবার ড্যাম নির্মানের উদ্যোগ গ্রহণ করলে কৃষকরা এরকম দূর্ভোগে পড়ত না। স্লুইচগেটটি সচল করতে নতুন করে প্রকল্প তৈরির জন্য গত ডিসেম্বর মাসে ঢাকা থেকে বিদেশী বিষেশজ্ঞসহ এলজিইডি’র উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দল পরিদর্শন করে গেছেন। ওই সময় স্থানীয় কৃষকরা  স্লুইচগেটটি সচল না করে রাবার ড্যাম করার দাবী জানিয়েছে ।






এক সপ্তাহে ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের নকশা অনুমোদন দীর্ঘ ১১ মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু

মহসীন শেখ॥   দীর্ঘ এগার মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানীর ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ...