মঙ্গলবার, ২০ মার্চ, ২০১২

অবশেষে ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে রামুর সুপ্রাচীন উত্তর মিঠাছড়ি বন বিহার

॥ প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু ॥   
রামু উপজেলার জোয়ারিনালা ইউনিয়নস্থ উত্তর মিঠাছড়ি গ্রামের সুপ্রাচীন বন বিহার অবশেষে ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত সারমিত্র মহাথের বলেন, কাঠনির্মিত বিহারটি অতি জরাজীর্ণ হওয়ায় বিহারটি ঢাকার এক স্ক্রাপ ব্যবসায়ীকে বিক্রি করা হয়েছে। ক্রেতারা গত ১৮ মার্চ বিহার ভাঙ্গার কাজ শুরু করেছেন।
তিনি আরো বলেন, বিক্রয়লব্দ অর্থ নতুন ভবন নির্মাণে ব্যয় করা হবে। এদিকে গত ১৭ মার্চ তিনি নবনির্মিত বিহারে প্রবেশ করেছেন। বিহারে গিয়ে দেখা গেছে পুরানো বিহার থেকে দক্ষিণে প্রায় ১০০ গজের মধ্যে নতুন বিহারের কাজ চলছে। আপাতত গ্রাউন্ড ফ্লোরে তৈরি দুটি কক্ষের একটিতে বিহারধ্যক্ষ অবস্থান করছেন। প্রথম তলার ছাদ জমানো হয়ে গেলে ও এখনো অলংকরণের কাজ হয় নি। তবে অর্থের অভাবে নির্মাণ কাজ পুরোদমে চালানো যাচ্ছে না।

তংসোয়ের ক্যাং থেকে বন বিহার :
বিহারের গায়ে লিখা আছে প্রতিষ্ঠা কাল ১৭৬৭ ইংরেজী। আনুমানিক প্রায় আড়াইশত বছরের পুরানো বিহার বলা না গেলে ও বলা যায় সুপ্রাচীন বৌদ্ধ বিহার। বিহারটি বর্তমানে বন বিহার নামে সর্বাধিক পরিচিত। তবে আনুমানিক ১৯৫১ সালের আগ পর্যন্ত এই বিহারের নাম ছিল তংসোয়ের ক্যাং। অনেক তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে জানা যায়, বর্তমান উত্তর মিঠাছড়ি গ্রামে রাখাইন সম্প্রদায়ের বসতি ছিল। প্রায় একশত রাখাইন পরিবার সেখানে বসবাস করতেন। তারা বাড়ি ঘর জায়গা-জমিন , ধন-সম্পদে অনেকটা স্বয়ং সস্পূর্ণ ছিলেন। তারা সবাই তংসোয়ের ক্যাং এর দায়ক দায়িকা ছিলেন। উক্ত বিহারের নামে প্রায় ১২ একর ভূমি ছিল। মিয়ানমা রেঙ্গুন থেকে সিদ্ধ করা কাঠ এনে উক্ত বিহারটি নির্মাণ করা হয়েছিল। রাখাইন সম্প্রদায় বংশ পরম্পরা সেখানে বসবাস করে আসছিলেন। আনুমানিক ১৯৫১ সালের দিকে উত্তর মিঠাছড়ি গ্রামের জন্ম জাত ভিক্ষু প্রজ্ঞাবিন্দ মহাথের’র তত্ত্বাবধানে একই রাতে সবাই আকিয়াব শহরে চলে যান। যাওয়ার সময় তারা বাড়ি ঘর, জায়গা জমিন সবকিছু ফেলে যান। তাদের এই সম্পত্তি স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু লোক দেখাশুনা করেন। পরবর্তীতে তারা আর ফিরে না আসায় ভোগ দখলকারীরা স্থায়ীভাবে ভোগ দখল শুরু করেন। আকিয়াব শহরের প্রায় ৪ মাইল পশ্চিমে তারা বসতি স্থাপন করেন। সেখানে ও তারা তংসোয়ের নামে একটি গ্রাম ও বিহার গড়ে তোলেন যা বর্তমানে ও আছে।

বন বিহার থেকে প্রজ্ঞামিত্র বন বিহার :

বন বিহারে ১৯৬২ সালের দিকে অবস্থান শুরু করেন বাশখাঁলীর জন্মজাত কৃতি সন্তান, আলোকিত  সংঘপুরোধা ভদন্ত প্রজ্ঞামিত্র মহাথের। তিনি উক্ত বিহারে সুদীর্ঘ প্রায়  ৪৪ বছর অবস্থানকালীন সময়ে অবশেষে  ২০০৭ মহাপ্রয়াণ করেন। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের দিকে পাকা ভবন নিমার্ণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে এর নাম প্রয়াত ভান্তের নামানুসারে প্রজ্ঞামিত্র বন বিহার নামকরণ করা হয়। বিহারাধ্যক্ষ বলেন, প্রয়াত প্রজ্ঞামিত্র মহাথের জীবনের সুদীর্ঘ সময় অত্র বিহার, গ্রামবাসী এবং ধর্মের প্রসারে কাজ করে গেছেন। মূলত তাঁকে অনন্ত কাল ধরে রাখার জন্য আমরা বিহারের নাম প্রজ্ঞামিত্র বন বিহার রেখেছি। অত্র বিহারের নাম তাঁর নামানুসারে হওয়ায় গ্রামবাসী ও সন্তুষ্ঠ হয়েছেন।

এক সপ্তাহে ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের নকশা অনুমোদন দীর্ঘ ১১ মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু

মহসীন শেখ॥   দীর্ঘ এগার মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানীর ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ...