মঙ্গলবার, ২০ মার্চ, ২০১২

প্রশাসনের নিরবতায় যত্রতত্র গজিয়ে উঠছে শুটকীর দোকান : পর্যটন শহরে শুটকীর দূর্গন্ধে বিব্রত পর্যটক

॥এম. সেলিম ॥  
পর্যটন নগরী কক্সবাজার শহর ও হোটেল মোটল জোনের বিভিন্ন স্পট, বিপনী বিতান ও মার্কেটগুলোতে যত্রতত্র গজিয়ে উঠছে শুটকীর দোকান। ফলে শুটকীর তীব্র দূর্গন্ধে বিষিয়ে উঠেছে আশেপাশের পরিবেশ। শুটকীর এ অসহনীয় দূর্গন্ধে স্থানীয় লোকজন সহ কক্সবাজার বেড়াতে আসা দেশ-বিদেশের পর্যটকরা অতিষ্ট
হয়ে উঠেছে। প্রশাসনের কোন প্রকার নজরদারী না থাকায় পর্যটন নগরী কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে গজিয়ে উঠা এসব শুটকীর দোকানের দূর্গন্ধে প্রতিনিয়ত পর্যটকরা বিব্রত ও দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে। বিশ্ব জুড়ে স্বাস্থ্যকর স্থান হিসেবে কক্সবাজারের পরিচিতি থাকলেও বর্তমানে বিভিন্ন আস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার কারনে অতীতের সেই সুনাম অনেকটা ম্লান হতে বসেছে।
সরেজমিন পরিদর্শন করে জানা যায়, কক্সবাজার শহর, হোটেল মোটেল জোন ও বিভিন্ন মার্কেট গুলোতে আশংকাজনক ভাবে বাড়ছে শুটকীর দোকান ও আড়ত। অতিরিক্ত দূর্গন্ধে পর্যটকদের দূর্ভোগের পাশাপাশি এসব দোকানের শুটকীর মানও অত্যন্ত নিম্নমানের।
পর্যটকদের কেনাকাটার গুরুত্বপূর্ণ স্থান বার্মিজ মার্কেট, পুরাতন ঝিনুকমার্কেট, লাবনী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, কলাতলী পয়েন্ট, সি-ইন মার্কেট পয়েন্ট, বিভিন্ন বাস কাউন্টার সংলগ্ন তাকরা মানের হোটেল সংলগ্ন ও বিভিন্ন সড়কের ফুটপাতে যত্রযত্র গজিয়ে উঠছে অসংখ্য শুটকীর আড়ত ও দোকান। কক্সবাজারে স্বপরিবারে বেড়াতে আসা চট্টগ্রামের জিইসি মোড় এলাকার বাসিন্দা আলাউদ্দিন জানান, ব্যবসায়ীরা ছলছাতুরীর আশ্রয় নিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে নিম্নমানের পঁচা শুটকী প্যাকেটজাত করে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষন করতে সারিবদ্ধভাবে ঝুলিয়ে রাখে। অথচ তাতে নেই কোন বিএসটিআই এর সীল, নেই কোন মেয়াদোত্তীর্নের তারিখ। বার্মিজ মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা পর্যটকরা জানান “বার্মিজ পণ্য পর্যটকদের কাছে খুব আকর্ষনীয় কিন্তু বর্তমানে শুটকীর দূর্গন্ধে বার্মিজ মার্কেট এলাকার পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়েছে। কেনাটাকা তো দুরের কথা শুটকীর অসহনীয় দূর্গন্ধে চলাচল করাও দুস্কর।” শহরে বিভিন্ন স্থানে পর্যটক তথা জনজীবনের চলাচলের কথা চিন্তা না করে একশ্রেণীর স্বার্থন্বেষী মহল যত্রতত্র শুটকীর দোকান গড়ে তুলা পরিবেশ দূষিত করে তুলেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী পর্যটক সুমনা ইয়াছমিন জানান- ‘যেখানে পরিবহন, বিমান ও রেলে ভ্রমন কালে শুটকী বহনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপে বিধি নিষেধ রয়েছে সেখানে উন্মুক্ত ভাবে শুটকী বেচাকেনা সত্যি অবাক হওয়ার বিষয়। আর কক্সবাজারের মত স্বাস্থ্যকর স্থানে প্রশাসন কিভাবে এই শুটকীর দোকান করার অনুমতি দিয়েছে তা বোধগম্য নয়’। এদিকে শুটকীর অসহনীয় গন্ধে স্থানীয় লোকজনসহ পর্যটকরা অতিষ্ট হওয়ার পাশাপশি শুটকী ব্যবসায়ীদের প্রতারণারও শিকার হচ্ছে ক্রেতারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শুটকী ব্যবসায়ী জানান, “মাছ শুকানোর সময় পোকার আক্রমন থেকে রা পেতে শুটকীতে বিষাক্ত ব্যাটারীর পানি ও নাইট্রিক এসিড ব্যবহার করা হয়। যা শরীরের জন্য মারাত্মক তিকর। এছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের পর এসব শুটকী খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। যা খেলে শরীরে বিভিন্ন রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। কিন্তু শুটকী ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন অপকৌশল অবলম্বন করে এসব খাওয়ার অনুপযোগী বিষাক্ত পোকা-মাকড় ও কিটনাশক যুক্ত শুটকী প্লাষ্টিকের প্যাকেট দ্বারা সুসজ্জিত করে বিভিন্ন প্রজাতির ছুরি, লইট্যা, চান্দা, চিংড়ী, মাইত্যা, পোয়া, ইলিশ, পাঁচকাটা, লক্ষা, সুরমাসহ শতাধিক প্রজাতির শুটকী অবাধে বিক্রি করে চলেছে”। বিভিন্ন সময় জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ে আইন শৃংখলা কমিটির সভায় একাধিকবার শহরের সৈকত এলাকা, হোটেল মোটেল জোন, বার্মিজ মার্কেটসহ বিভিন্ন সড়কের ফুটপাতে অবস্থিত জনকোলাহলরত স্থানের সকল শুটকীর দোকান গুলো সরিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় স্থানান্তরিত করার প্রস্তাব গৃহীত হলেও রহস্যজনক কারনে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় উক্তমহল বিশেষ কৌশলে দোদারছে অদ্যাবধি শুটকী ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে সচেতন মহলসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনক শুটকীর দুর্গন্ধ রোধে প্রশাসনের সুদৃষ্টির কামনা করলেও কাজের কাজ তেমন পরিলতি হয়নি। দেশের অন্যতম কক্সবাজার পর্যটন নগরীর পর্যটন স্পটগুলোসহ পাবলিক প্লেস সমূহের শুটকীর দোকান গুলো সরিয়ে সত্ত্বর কোলাহল মুখর পরিবেশ সৃষ্টি করতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানান দেশ-বিদেশের পর্যটক সহ স্থানীয় জনসাধারন।

এক সপ্তাহে ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের নকশা অনুমোদন দীর্ঘ ১১ মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু

মহসীন শেখ॥   দীর্ঘ এগার মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানীর ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ...