শুক্রবার, ৩০ মার্চ, ২০১২

চকরিয়ায় সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মন্দিরের জমি দখলের অভিযোগ

॥ রামু নিউজ ডেস্ক॥ 
চকরিয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় পুরোহিতকে (ব্রাহ্মণ) বাড়িতে অবরুদ্ধ করে শিব মন্দিরের বিপুল পরিমাণ জায়গা জবর-দখল করে নিয়েছে। গত বুধবার রাত ও গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে শতাধিক সন্ত্রাসী পাহারায় রেখে সরকার দলীয় স্থানীয় কয়েকজন নেতা মন্দিরের এসব জায়গা দখলে নেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার হারবাং ইউনিয়নে উত্তর হারবাংস্থ প্রাচীন শিব মন্দিরে এ দখলের ঘটনাটি ঘটে। এর আগে খবর পেয়ে চকরিয়া থানা ও স্থানীয় হারবাং ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে কয়েকদফা অভিযান চালায়। এরপরেও সন্ত্রাসীরা মন্দিরের জায়গা দখল করে নিয়ে দখল করে নিয়ে সেখানে স্থাপনা নির্মাণকাজ শুরু করেছে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (আইসি) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী দৈনিক কক্সবাজারকে জানান, মন্দিরের জায়গা দখলের খবর পেয়ে কয়েকবার ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে অভিযান চালায় এবং জবর-দখলকারীদের কোন ধরণের স্থাপনা নির্মাণ না করতে নিষেধ করা হয়। এরপরও দখলকারীদের বলা হয়েছে, তাদের স্বপক্ষে কোন কাগজপত্র থাকলে তা নিয়ে ফাঁড়িতে আসার জন্য। তিনি জানান, দখলকারীরা সরকার দলীয় নেতাকর্মী হওয়ায় উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছেনা।
হারবাং শিব মন্দিরের পুরোহিত ননী গোপাল চক্রবর্তী জানান, উপজেলার উত্তর হারবাং এলাকায় সরকার শিব মন্দিরের নামে ৩২২২ দাগের সাড়ে ৫ একর জায়গা বন্দোবস্তি দেয়। মূলতঃ এসব জায়গা একসময় সংরক্ষিত বনভূমি ছিল। পরে তা শিব মন্দিরের নামে বন্দোবস্তি দেওয়া হয় এবং এসব জায়গা মন্দিরের পুরোহিত হিসেবে দেখভালের দায়িত্ব অর্পন করা হয় তাকে।
পুরোহিত অভিযোগ করে বলেন, ‘ইতিপূর্বে শিব মন্দির পরিচালনার নামে তথাকথিত একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে রয়েছেন শ্যামল কান্তি আর্চায্য, বিমল নাথসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের একদল ভূমিদস্যু। সম্প্রতি তারা উপজেলা পূজা কমিটির আহবায়ক দাবিদার তপন কান্তি দাশ ও সদস্য সচিব বাবলা দেবনাথকে নিয়ে মন্দিরের কর্তৃত্ব দখলে নেওয়ার জন্য শিব মন্দিরে আসেন। এ সময় তারা আমাকে (পুরোহিত) মন্দির ছেড়ে চলে যাওয়ারও জন্য নির্দেশ দেন এবং তাদের কথামতো মন্দির ছেড়ে চলে না গেলে প্রাণে মারারও হুমকি দেন। এমনকি তারা প্রতিনিয়ত আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে চলেছে। এর কারণ হচ্ছে, আমি যাতে মন্দির ছেড়ে চলে যাই।’ তিনি জানান, তাদের দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলায়ও উচ্চতর আদালত আমার স্বপক্ষে রায় দিয়েছেন।
পুরোহিত বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার রাতে ও গতকাল সকালে হারবাং ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মোরশেদ, মোহাম্মদ ইসলামের পুত্র পারভেজ ও শাহাদাত মুন্সির পুত্র অহিদ প্রায় শতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিয়ে তাকে বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখে। এ কারণে আমি গতকাল মন্দিরের কোন পূজা-অর্চনা করতে পারিনি। এ সুযোগে তারা মন্দিরের নামে বন্দোবস্তিকৃত বেশকিছু জায়গা জবর-দখল করে সেখানে স্থাপনা নির্মাণকাজ শুরু করে।’
চকরিয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. তেজেন্দ্র লাল সুশীল বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে শিব মন্দিরের নামে বন্দোবস্তিকৃত জায়গা দখলে নেওয়ার জন্য একটি কুচক্রিমহল পায়তারা চালিয়ে আসছিল। তিনি মন্দিরের জায়গা দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান প্রশাসনের প্রতি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ফরহাদ বলেন, ‘এ ঘটনার পর কয়েকবার ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং আমি উভয়পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে থানায় আসতে বলেছি। যদি কেউ মন্দিরের জায়গা দখল করে থাকে, তাহলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এক সপ্তাহে ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের নকশা অনুমোদন দীর্ঘ ১১ মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু

মহসীন শেখ॥   দীর্ঘ এগার মাস পর কক্সবাজারে নকশা অনুমোদন দেয়া শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানীর ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের ...