॥ রামু নিউজ ডেস্ক ॥
আইএসআইয়ের কাছ থেকে বিএনপির অর্থ ‘নেওয়া’ সম্পর্কিত বক্তব্য সংসদের
কার্যবিবরণী থেকে বাদ না দিলে বৃহস্পতিবার থেকেই ফের সংসদ বর্জনের ইংগিত
দিয়েছেন বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক।
বুধবার এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি বলেন, “সরকার সংসদকে অচল
করে ফেলেছে। সেখানে
সর্বক্ষণ মিথ্যাচার, অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়া হয়। আমরা
স্পিকারকে বলেছি- অবিলম্বে মিথ্যা ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য সংসদের
কার্যবিবরণী থেকে বাদ দিতে হবে।” বুধবার এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি বলেন, “সরকার সংসদকে অচল
“তা না হলে বৃহস্পতিবার থেকে আমরা অধিবেশনে যাব না”, যোগ করেন তিনি।
টানা ৭৭ কার্যদিবস বর্জনের পর বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় সদস্যরা গত ১৮ মার্চ সংসদে ফেরে। আগামী বৃহস্পতিবার আবার সংসদের মুলতবি অধিবেশন বসবে।
বিএনপি ওইদিন থেকেই যে সংসদ বর্জন করতে পারে, মঙ্গলবারও এক অনুষ্ঠানে সে ইংগিত দেন ফারুক।
বুধবার জিয়া ব্রিগেড আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতাকে অনুরোধ জানাচ্ছি- এখনো সময় আছে, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি সংবিধানে সংযোজন করুন। সংসদে অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়া বন্ধ করুন। নইলে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন না।”
সরকারকে তিনি হুঁশিয়ার করেন, “স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের চেয়েও কঠিনভাবে আপনাদের পতন ঘটানো হবে।”
১৯৯১ সালে নির্বাচনের আগে বিএনপি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছিল- মধ্যপ্রাচ্যের দৈনিক খালিজ টাইমসে এমন খবর প্রকাশের পর থেকেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য চলছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিক সভায় এই বক্তব্য তুলে ধরে বিএনপির সমালোচনা করছেন। অন্যদিকে বিএনপি বলে আসছে, খবরটি পুরোপুরি মিথ্যা।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলে, ওই ধরনের কোনো বক্তব্য দুররানি আদালতে দেননি।
বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া সস্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে ফারুক মানববন্ধনে বলেন, “একজন প্রধানমন্ত্রীর এ রকম বক্তব্য শুনে আমরা মর্মাহত ও বিব্রতবোধ করছি। প্রধানমন্ত্রীকে সবিনয়ে বলব, আপনি দেশনেত্রী সম্পর্কে এ রকম বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকুন। নইলে আমাদের নেতারাও আপনার সম্পর্কে নানা প্রশ্ন তুলতে বাধ্য হবে।”
নয়াপল্টনের মহাসমাবেশ থেকে বিএনপির সময় বেঁধে দেওয়ার কথঅ মনে করিয়ে দিয়ে বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ বলেন, “এখনো সময় আছে, সমঝোতার পথ খোলা আছে। ১০ জুন এখনো দেরি আছে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিয়ে আলোচনায় বসুন।”
গত ১২ মার্চ ঢাকার মহাসমাবেশে থেকে খালেদা জিয়া নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মেনে নিতে সরকারকে ১০ জুন সময় দেন। এর মধ্যে দাবি না মানলে ১১ জুন ঢাকার সমাবেশ করে নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেন তিনি।
দেশের সব সাংবাদিক হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত-বিচার ও বেসরকারি টেলিভিশন একুশে টিভি বন্ধের ‘ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে জিয়া ব্রিগেড জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন করে।
সরকারের নীতির সমালোচনা করে এতে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, “তিন বছরে ১২ জন সাংবাদিক খুন হয়েছে, এর বিচার হয়নি। চ্যানেল ওয়ান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুনেছি, অনেক পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এভাবে সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ করে সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।”
সংগঠনের সভাপতি জাহিদ ইকবালের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সংসদ সদস্য নীলুফার চৌধুরী মনি, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ, হৃদয়ে বাংলাদেশের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. হানিফ, রফিক শিকদার, জিয়া ব্রিগেডের মহাসচিব আবুল হোসেন মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন।